“আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের আত্মপরিচয়”—এই স্লোগানকে সামনে রেখে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসু উপলক্ষে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শনিবার (৫ এপ্রিল ২০২৫) বিকেলে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের ঠাকুরছড়া নতুন বাজার মাঠে আয়োজিত এই উৎসবের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গেইটে রঙিন ফিতা কেটে, স্টেজে রঙিন বেলুন উড়িয়ে এবং মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।
বৈসু উদযাপন কমিটি, ঠাকুরছড়া নতুন বাজার এলাকার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের উদ্বোধনী আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন ওয়ারেন্ট অফিসার ননী ব্রত ত্রিপুরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বামী ও বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদের খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রেভিলিয়াম রোয়াজা, প্রাক্তন জেলা সমবায় কর্মকর্তা রত্ন কান্তি রোয়াজা, সমাজসেবক অরুণ বিকাশ ত্রিপুরা, ঠাকুরছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনক ত্রিপুরা এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজসেবক পুলক নারায়ণ ত্রিপুরা।
আলোচনা সভা শেষে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী খেলা ‘সুকৈ’ এবং বিবাহিত বনাম অবিবাহিত মহিলা-পুরুষদের দড়ি টানাটানি খেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিরুনা ত্রিপুরা বলেন, “জাতির উন্নয়নের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন শিক্ষা। শিক্ষা ছাড়া কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা, উৎসব—সবকিছুই শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত হতে হবে। শুধু উৎসবে আনন্দ করলেই হবে না, ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে। সমাজে প্রতিহিংসা ও নেতিবাচক মনোভাব পরিহার করতে হবে। কারণ প্রতিহিংসা কখনও জাতি, সমাজ কিংবা এলাকার কল্যাণ বয়ে আনে না। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে এগিয়ে যেতে হবে।”
অনুষ্ঠান শেষে স্থানীয়দের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নানা খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুখর হয়ে ওঠে উৎসব প্রাঙ্গণ। এসময় ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর নানা বয়সী মানুষ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে এ উৎসবে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
মন্তব্য করুন