মৌলভীবাজারের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৪ আগস্টে ভূয়া গুলিবিদ্ধ সেজে আহত তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
এমন দাবি উঠেছে মৌলভীবাজার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক অফিসিয়াল পেজ থেকে।
রাজনগর উপজেলায় ফজলে রাব্বি নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সে নিজেকে আহত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং সরকারের অনুদান ও সুবিধা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। জানা গেছে, ফজলে রাব্বি ৪ আগস্ট মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত একটি আন্দোলনে নিজেকে আহত দাবি করে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেন।
তবে সত্যতা যাচাই করলে জানা যায়, ওই দিন তিনি সিলেট সদরে অবস্থান করছিলেন এবং পেটের অসুখের কারণে সিলেটের মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
ফজলে রাব্বির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়, সে দীর্ঘদিন ধরে পেটের অসুখ ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগে ভুগছেন এবং নিয়মিত চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবুও, আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ ছাড়াই তিনি দাবি করেছেন যে, ওই দিন পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হয়েছিলেন এবং তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তবে বাস্তবে তার এই দাবির কোনো প্রমাণ নেই। কোনো গুলির চিহ্ন কিংবা শারীরিক জখম তিনি দেখাতে পারেননি। এমনকি তার কথার বিপরীতে হাসপাতালে ভর্তি থাকা সংক্রান্ত নথিও প্রমাণ করে তার মিথ্যাচার। এই ধরনের প্রতারণা শুধু আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধই করছে না, বরং আন্দোলনের প্রকৃত আহতদের ন্যায্য দাবিকেও ক্ষুণ্ণ করছে।
বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন মৌলভীবাজারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংশ্লিষ্টরা।
এই ধরনের জালিয়াতি ও প্রতারণা যারা করছেন, তারা কীভাবে আন্দোলনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের পবিত্রতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন?
সমাজ ও প্রশাসনের উচিত এমন অপরাধীদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হক,
দেখা যায় জুলাই বিপ্লব আহত তালিকায় উল্লেখ, নাম ফজলে রাব্বি, পিতা আব্দুস সালাম, গ্রাম সোনাটিকি, মুন্সিবাজার রাজনগর, গুলি ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা আহত ০৪/০৮/২৪ ইং মৌলভীবাজার জেলার চৌমুহনা, মৌলভীবাজারে যুবলীগের গুলিতে আহত।
এই বিষয়ে মৌলভীবাজার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জাবেদ আহমেদ বলেন, "সে গুলি খেয়েছে কিংবা চৌমুহনা আন্দোলন করেছে আমাদের সাথে এমন কোনো প্রমাণ তার কাছে নেই। সে প্রতারক ও মিথ্যাবাদী। এসব ভুয়া আহতদের জন্য প্রকৃত আহতরা সিন্ডিকেটের শিকার, এদেরকে প্রতিহত করতে হবে। না হলে জুলাই বিপ্লবের শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি হবে।"
ফজলে রাব্বি বলেন, "আমি জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনের সাথে যুক্ত আসলাম। আমার কাছে সব প্রমাণ আছে। সিলেটের সব আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলাম। আমি ১৮ জুলাই সিলেট আন্দোলনে যুক্ত হয়ে আহত হয়েছি পুলিশের টিয়ার গ্যাসে। তখন আমি প্রাথমিক চিকিৎসা নিই, সিলেট মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে। গুরুতর আহত না থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে আসি মৌলভীবাজারে। আমি ৪ আগস্ট মৌলভীবাজার চৌমুহনা গুলিবিদ্ধ হয়নি, কীভাবে আমার নাম জুলাই বিপ্লবের আহত তালিকায় প্রকাশ করা হলো, আমি নিজেও জানি না। আমার শরীরে গুলি আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই।"
রাজনগর স্বাস্থ্য উপকমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সজীব বলেন, "মৌলভীবাজার জুলাই বিপ্লবের ৪ আগস্টে আন্দোলনে চৌমুহনা ছিলে না, কীভাবে তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সে নিজে বলতে পারবে।"
রাজনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আফরোজা হাবিব শাপলা বলেন, "আমি এখানে দায়িত্ব নেওয়ার আগে জুলাই বিপ্লবের আহত তালিকা হয়েছে। এই বিষয়টা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।"
মন্তব্য করুন