ঢাকা , সোমবার, ২০২৫ এপ্রিল ২১, ৭ বৈশাখ ১৪৩২
#

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

৯ মাস বেতন বন্ধ থাকার কারণে গেইটকিপারের মৃত্যু, চরম হতাশা

মাহমুদ, সন্দীপ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম।
প্রকাশিত : সোমবার, ২০২৫ ফেব্রুয়ারী ১০, ০২:১৭ অপরাহ্ন
#

দীর্ঘ ৯ মাস বেতন বিহীন থাকার পর হতাশা ও দুশ্চিন্তায় পারিবারিক অভাব-অনটন চাপ সয়ে রাখতে না পেরে গত ০৮/০২/২০২৫ সকাল ১০ টায় স্টক করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আজ ০৯/০২/২০২৫ আনুমানিক দুপুর ১:৪০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।

এই পর্যন্ত মোট ৯ জন গেইটকিপার মারা গেছেন বিভিন্ন সময় বেতন বন্ধ থাকায় মানসিক চাপ সয়ে রাখতে না পেরে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রোগী আমাদের সাধ্যের বাইরে ছিল, আপনাদের দূত তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছিলাম, কিন্তু দীর্ঘ ৯ মাস বেতন বন্ধ থাকায় পারিবারিকভাবে টাকা-পয়সার ব্যবস্থা করতে অক্ষম হওয়ায় মিজানকে ঢাকা নেওয়া হয়নি।

তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ে মান উন্নয়ন শীর্ষ প্রকল্পের গেইটকিপার ছিলেন এবং গেইট নং ই-৯ (AJ) তিস্তা সেশনে কর্মরত ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও ১ ছেলে রেখে গেছেন।

এই বিষয়ে পশ্চিমের পিডি বিরবলকে ফোন দিলে তিনি জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। ৯ মাস বেতন বন্ধ থাকায় তারা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছে। পিডিবিরবল বলেন, তিনি অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি বিভিন্ন মানসিক চাপ সয়ে রাখতে না পেরে স্টক করে মারা যান।

একজন গেইটম্যান জানান, বেতনের জন্য বারবার রেলভবনে আন্দোলন করা হলেও কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও মন্ত্রণালয়ের কথা কাজে কোনো মিল নেই। আমাদের সহকর্মীরা বেতন ছাড়া খুবই কষ্টে ডিউটি করছেন, পরিবার নিয়ে সবাই খুব কষ্টে আছেন।

তারা আরো জানান, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বকেয়া বেতন ও চাকরি রাজস্বের দাবিতে রেলভবনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে সেনা ক্যাপ্টেন আরাফসহ গেইটম্যান ৬ জন প্রতিনিধি নিয়ে রেলের ডিজি সচিব ও অন্যান্য অফিসারদের উপস্থিতিতে রেলভবনে মিটিং হয়। মিটিং শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়, নভেম্বর মাসের ১ তারিখের মধ্যে বেতন ক্লিয়ার করা এবং চাকরি স্থায়ীকরণের জয়েন্ট লেটার দেওয়া হবে বলে ডিজি সরদার সাহাদাত হোসেন সব অফিসারের সামনে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু নভেম্বর মাস শেষ হয়ে ডিসেম্বর অতিবাহিত হওয়ার পরও বেতন ও চাকরির কোনো সুরাহা হয়নি।
১৯ ডিসেম্বর তারা আবার রেলভবন ঘেরাও করলে সচিব ও ডিজি আবার মিটিং করে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে চাকরি রাজস্ব সম্ভব এবং বেতন পাওয়া যাবে। প্রধান উপদেষ্টাকে তারা বুঝিয়ে বলেন, খুব দ্রুত এটি সমাধান করা হবে। কিন্তু আজ এক মাস শেষ হলেও বেতন ও রাজস্বের কোনো সুরাহা হয়নি। এখনো এই নিয়ে গেইটকিপারদের মধ্যে চরম হতাশা ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video