উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নস্থ মহিলা ও শিশু কিশোরী হেফাজতীদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র (সেফহোম) পরিদর্শনকালে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
শুক্রবার সকালে পরিদর্শনে গিয়ে হেফাজতীদের সাথে আলাপ ও তাদের থাকার পরিবেশ দেখে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এসময় শারমিন নামে সতেরো বছর বয়সী এক কিশোরী জানান, সেফহোমে যারা আছেন তাদের সবাই এলার্জিতে আক্রান্ত। উপদেষ্টা কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসার কথা জানতে চাইলে জানানো হয় চিকিৎসা চলছে। তবে তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে সবাই এলার্জিতে আক্রান্ত, নিশ্চয় চিকিৎসার মান ভালো নয়।”
থাকার পরিবেশ দেখে উপদেষ্টা বলেন, “মনে হচ্ছে বিছানা উল্টে দেখলে ছারপোকা বেরিয়ে আসবে।” তিনি দ্রুত সময়ে সেফহোমের পরিবেশ উন্নয়ন এবং প্রতি মাসে হেফাজতীদের জন্য চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
এছাড়া ঢাকা জেলার কিশোরী সাদিয়া, নোয়াখালী জেলার নূর নাহার নিহা ও আরিফা আক্তার সালমা জানান, “পানিতে প্রচুর আয়রন রয়েছে, গোসল করলেই শরীরে চুলকানি হয়। চিকিৎসা চললেও কোনো কাজ হচ্ছে না। পানির ট্যাংকও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না।”
এর আগে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র ও সরকারি শিশু পরিবার (বালক) পরিদর্শন করেন।
এ সময় তারা সেখানে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দেখে মুগ্ধ হন।
উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেন, “শিশুদের প্রতিভা দেখে চোখে পানি চলে এসেছে। রাষ্ট্রের উচিত তাদের সকল সুবিধা নিশ্চিত করা।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে তারা বুঝতে না পারে তারা এতিম।”
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “সারা পৃথিবী যেন জানতে পারে—এখানে শিশুরা ভালো আছে, তারা পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠছে। তাদের মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান, শিষ্টাচার, সেবা ও ভালোবাসা। তাদের মধ্যে রয়েছে নাচ-গান তথা বিনোদনের প্রতিভা। এ জন্য প্রয়োজন দক্ষ শিক্ষক। যদি না থাকে, তাহলে দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে।”
তিনি শিক্ষার্থীদের অঙ্ক ও বিজ্ঞান শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন। পরিদর্শন শেষে সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে বৃক্ষরোপণ করা হয়।
পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক কাজী নাজিমুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব, উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম ও ফরিদুল আলম, সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ আবুল কাশেম, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান, হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আজিজ, উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে, সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম, কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মামুন শিকদার, সমাজসেবা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ, স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আজমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মন্তব্য করুন