ঢাকা , সোমবার, ২০২৫ এপ্রিল ২১, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
#

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সরফভাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃক্ষকাটার প্রতিবাদে মানববন্ধন

অনিরুদ্ধ অপু, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।
প্রকাশিত : রবিবার, ২০২৫ জানুয়ারী ২৬, ০৫:২৭ অপরাহ্ন
#

সবুজের মাঝে শ্যামল সমারোহ এক প্রকৃতির নাম সরফভাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাইমারী স্কুলের মধ্যে রাঙ্গুনিয়ার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম একটি। এই বিদ্যালয়ের চারপাশ জুড়ে আছে সবুজের ছায়াবৃত, দাড়িয়ে আছে উকি দিয়ে বৃক্ষের সারি সারি। এক শতকের ঊর্ধ্বেই শীতের শিশিরভেজা সকাল কিংবা কুয়াশামাখা সন্ধ্যায় পুরো স্কুল জুড়েই মুখরিত হয়ে উঠে আশ্রয়ের খোঁজে আসা পরিযায়ী পাখির কলতানে। এখন শুধু নিঃশব্দতা, কে শোনে কার কথা, কে বা কানে পৌঁছাবে তাদের দুঃখের ব্যথা। শতাধিক গাছ আর ৩ শতাধিক স্কুলের কোমলমতি শিশুদের কান্নায় অশ্রুজলে ভাসিয়ে দিলো সরফভাটা সরকারী প্রাথমিক স্কুলের পরিবেশ। হামিগুঁড়ি আর হাতছানি দিয়ে ডাকবেনা আর কোনদিন। শতাধিক গাছ কেটে ফেলাই গাছেদের কান্না শোনার কেউ আর ঠেকাতে আসেনি। অবশেষে স্কুলের কোমলমতি ছাত্ররা আজ (২৭ জানু) সোমবার বৃক্ষকাটার প্রতিবাদে পাশে দাঁড়িয়েছে মানববন্ধনের মাধ্যমে।
কি বা প্রয়োজন হলো ইউএনও’র এই গাছগুলো কাটার? কে দেবে এলাকাবাসীর মুখে তালা? আগে চোখ পড়েছিল বালুতে আর এখন নজর পড়েছে সরকারি গাছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের জায়গাটি জেলা পরিষদের। এলাকাবাসী বলছে, ১১৮ বছর পূর্বে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৮০-৮৩ সালে নাকি স্কুল পরিচালনা কমিটির লাগানো শতাধিক গাছ ছিল এগুলো। যদিও স্কুল পরিচালনা কমিটি লাগানো শতাধিক গাছ এখন সরকারি সম্পত্তি। তবে তারা মনে করে সরকারি গাছ কাটতে গেলে উপজেলা পরিষদের রেজল্যুশন, টেন্ডার ও বন বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এসব না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে। সীল স্বাক্ষর বিহীন একটি কাগজে দেখা যায় ২৫টি পরিপক্ব গাছ কাটার জন্য নামমাত্র বিক্রির অনুমতি দেখানো হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, পাশাপাশি আরও অতিরিক্ত ৭০-৮০টি অপরিপক্ব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এমনকি ইউএনও স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে গত ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে ২.৩০টা পর্যন্ত গাছগুলো কর্তন করে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা। কিন্তু বিক্রয় করা হয়েছে মাত্র ১৫% ভ্যাট, ৫% আয়করসহ সর্বমোট ১লক্ষ ৩৬হাজার ৮শ টাকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীল স্বাক্ষর বিহীন ইউএনও কর্তৃক প্রদত্ত ৫০০ টাকার মূল্যের এক ফরমসীডে লেখা রয়েছে, "চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ভূমিতে স্থিত ২৫টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রি করা হয়েছে। কিনেছেন স্থানীয় বিএনপি কর্মী মো. ইসমাইল মেম্বার।
গাছ কেটে ফেলায় সমালোচনার মুখে পড়েন ইউএনও।
এ বিষয়ে গাছ ক্রয়কারী মো. ইসমাইল মেম্বার বলেন, "আমি জেলা পরিষদের কাজ থেকে নিলামে কিনেছি, ১২টি কেটেছি, ২৫টির উপরে কাটবোনা। ইউএনও নিজেই উপস্থিত ছিলেন গাছ কাটার সময়।"
৪০-৪২ বছরের পুরোনো গাছ কেটে ফেলার ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা পরিষদে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video