ঢাকা , সোমবার, ২০২৫ এপ্রিল ২১, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
#

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাঁশখালীতে বিতর্কিত ইউপি সচিব হারুনুর রশিদকে কাথরিয়া ইউনিয়নে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

মোঃ দিদার হোসাইন, বাঁশখালী প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম।
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০২৫ জানুয়ারী ২৮, ০৬:০২ অপরাহ্ন
#

বাঁশখালীতে ইউনিয়ন পরিষদের বিতর্কিত সচিব হারুনুর রশিদকে সরল ইউনিয়ন থেকে পার্শ্ববর্তি কাথরিয়া ইউনিয়নে বদলি করার পর সেখানেও তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অবিলম্বে তার এই বদলি আদেশ বাতিল করার দাবি জানিয়ে বিতর্কিত ইউপি সচিব হারুনকে কাথরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকতে দেয়া হবেনা বলে হুশিয়ারি দেন উৎসূক জনতা।

অবিলম্বে তার বদলি আদেশ বাতিল করতে কাথরিয়া ইউনিয়নের ১২ জন ইউপি সদস্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছে।

১২ জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত আবেদনে উল্লেখ করা হয় কাথরিয়া ইউনিয়ন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ ছাত্রনেতৃবৃন্দ বিতর্কিত ইউপি সচিব হারুনকে কাথরিয়া পদায়ন না করতে অনুরোধ জানিয়েছে।

জানা গেছে, নানা বিতর্কিত কর্মকান্ড ও দুর্নীতির কারণে সরল ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য ও সাধারণ মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক নোমান হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে হারুনুর রশিদকে বাঁশখালীর সরল ইউনিয়ন থেকে কাথরিয়ায় বদলি করা হয়। ২৬ জানুয়ারী রবিবার তাকে নতুন কর্মস্থল কাথরিয়া ইউনিয়নে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই হারুনকে কাথরিয়ায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া, আনোয়ারুল আজিম, রফিক আহমদ, সৈয়দ আহমদ, নিলোয়ারা বেগম, দিদারুল আলম, কামাল আহমদ, আবু তালেব, হুমায়ুন কবির চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, ছকিনা খাতুন ও পাখি আক্তারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া জানান, হারুনুর রশিদ সরল ইউনিয়নে থাকা অবস্থায় নানা দুর্নীতি অনিয়মে জড়িয়েছেন। এজন্য তাকে সরল থেকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে। এখন বিতর্কিত এই ইউপি সচিবকে কাথরিয়ায় বদলি করার ফলে পুরো এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। তার গ্রামের বাড়িও কাথরিয়ায়। একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে আমরা কখনো মেনে নেব না।

ইউপি সচিব হারুনুর রশিদ জানান, আমি নতুন কর্মস্থল কাথরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে যোগদান করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে যেখানে ঢুকতে দেয়া হয়নি। আমি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদুল আলম জানান, এই বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পদক্ষেপ নেব।

উল্লেখ্য, ইউপি সচিব হারুনুর রশীদ সাধারণ মানুষ থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়ার নাম করে উৎকোচ নেওয়া, ইজিপিপি প্রকল্পের শ্রমিকদের কর্মসূচির টাকা উত্তোলনের সিম নিজের কাছে রেখে টাকা উত্তোলন, জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়ম, ছাত্র আন্দোলনের পর থেকে বিগত ৫মাসে কোনো মাসিক মিটিং না করে সাবেক চেয়ারম্যানের সীল, স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদানসহ নাগরিক সেবা প্রদানে অবৈধ ভাবে আর্থিক লেনদেন করেছেন বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ থাকলেও সাবেক এমপি মোস্তাফিজ ও সরলের পলাতক চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ চৌধুরীর একান্ত সহযোগী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলতে সাহস পেতোনা। আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে বিতর্কিত ইউপি সচিব হারুনের নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতি নিয়ে মুখ খোলতে শুরু করে ভুক্তভোগীরা। এসব অভিযোগে ২১ জানুয়ারী সরল ইউনিয়ন থেকে তাকে অপসারণ করা হয়েছে। নতুন করে কাথরিয়ায় পদায়নের ঘটনায় আবারো বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video