টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ১০ ধাপ পিছিয়ে থাকা দল যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় অর্জন তেমন কিছুই নেই তাদের। আর এবার সেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই হেরেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশকে হারাল তারা। এর আগে ২০২১ সালে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছিল দলটি। এক কথায় বলতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয় এটি। আর এমন জয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে এটি সবচেয়ে আনন্দময় দিন তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের মুণ্ডপাত করছেন বাংলাদেশের সমর্থকরা। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এমন হার নিঃসন্দেহে টাইগার শিবিরের বড় ধাক্কা। অনেকটা ‘ওয়েক আপ’ কলের মতো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই হারের দায় কার?
বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে টি-টোয়েন্টি জয়ের একটা ফর্মুলা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এতে অবশ্য তার মূল ভরসা ছিল বোলিং ইউনিট। আগে ব্যাট করলে ব্যাটাররা ১৬০-১৭০ রান করবেন। আর মিতব্যয়ী বোলিংয়ে বোলাররা ম্যাচ জেতাবেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথম শর্তই পূরণ করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ঘরের মাঠে সদ্য শেষ হওয়া জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ টাইগার ব্যাটাররা। এমন হারের জন্য স্বাভাবিকভাবে কাঠগড়ায় ওঠার কথা ব্যাটারদের। একই কাজ করলেন দলপতি।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভালো ব্যাটিং করতে না পারার আক্ষেপ ছিল শান্তর কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো ব্যাটিং করিনি। আমরা প্রথম দুই ওভারে ভালো শুরু করেছিলাম। কিন্তু মাঝে উইকেট হারিয়েছি। আমরা আরও ২০ রান বেশি করতে পারতাম। তাহলে ম্যাচটা অন্যরকম হতে পারত।
ব্যাট হাতে দীর্ঘদিন ধরে রান খরায় ভুগছেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে শুরুটা ভালো করেছিলেন লিটন। একবার জীবন পেয়েও এ ওপেনার আউট হন ব্যক্তিগত ১৪ রানে। আর টাইগার দলপতি ১১ বল খেলার পর সাজঘরে ফেরেন ৩ রান করে। এমন ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরও উইকেটকে দায়ী করছেন শান্ত।
তিনি বলেন, ‘আমি এটাকে ভুলের পুনরাবৃত্তি মনে করি না। আমার মনে হয় আমরা ভালো উইকেটে খেলছি না। জিম্বাবুয়ে সিরিজেও ভালো উইকেটে খেলিনি। তবে এটা মানসিক ব্যাপার। আশা করি ব্যাটসম্যানরা (ব্যাটাররা) ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
ম্যাচ জয়ের ফর্মূলায় বোলারদের ওপর ভরসা রেখেছিলেন টাইগার দলপতি। এমন লজ্জাজনক হারের দায়ে দলের বোলারকেও ভাগ দিলেন তিনি। বিশেষ করে তার কাঠগড়ায় উঠেছেন পেসাররা।
শান্ত বলেন, ‘সব স্পিনাররা ভালো বোলিং করেছে। আমাদের পেসাররা শেষ দুই-তিন ওভারে পরিকল্পনা মতো বোলিং করেনি। আশা করি পরের ম্যাচে ওরা ভালো করবে।
উল্লেখ্য, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৩ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। দুদলের প্রথম দেখায় বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল মার্কিনিরা। আর টেস্টখেলুড়ে দলের বিপক্ষে এটি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় জয়। এর আগে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ছিল তারা।
আগামী ১ জুন যুক্তরাষ্ট্রে বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমবারের মতো ক্রিকেটের কোনো বিশ্ব আসর আয়োজন করছে তারা। এরই প্রস্তুতিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। যা শুরুটা হলো হার দিয়ে। আগামী ২৩ ও ২৫ মে হবে সিরিজের বাকি দুই টি-টোয়েন্টি।
মন্তব্য করুন