ঢাকা , বুধবার, ২০২৪ মে ১৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
#

দেশজুড়ে

মদের দাম চাওয়ায় বারে ভাঙচুর, মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেলেন ছাত্রলীগ নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : শনিবার, ২০২৩ Jun ১০, ০৬:১৫ অপরাহ্ন
#
মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ হৃদয়। ছবি: সংগৃহীত

মদ্যপানের পর দাম চাওয়ায় রাজশাহী পর্যটন মোটেলের বারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ হৃদয়সহ তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মীরা বার ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা সেখানে গিয়ে পুলিশের কাছে ক্ষতিপূরণ ও মুচলেকা দিলে অবরুদ্ধ নেতা-কর্মীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। 


মদ্যপ নেতা–কর্মীরা বারের কর্মচারীদের মারধর করেন এবং তাদের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন। পরে বারের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের অবরুদ্ধ করেন বারের কর্মচারীরা। 

নাম না প্রকাশ করার শর্তে পর্যটন বারের এক কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার পরে ছাত্রলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ হৃদয়ের সঙ্গে ১২-১৩ জন নেতা-কর্মী বারে যান। এরপর তাঁরা মদপান শুরু করেন। তাদের সর্বমোট ৭ হাজার ২০০ টাকা বিল হয়। বিল চাওয়া হলে হৃদয় ছাত্রলীগের পরিচয় দেন এবং বিল দিতে অস্বীকৃতি জানান। বিষয়টি নিয়ে তর্কবিতর্ক শুরু হলে হৃদয়ের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা দুজন কর্মচারীকে মারধর করেন। কর্মচারীরা পুলিশে ফোন করার চেষ্টা করলে দুটি মোবাইল ফোন কেড়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। 

এরপর বারের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের অবরুদ্ধ করা হয়। পরে সেখানে পুলিশ যায়। ঘটনা জানতে পেরে রাজপাড়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাবিল হাসানসহ কয়েকজন নেতা সেখানে যান। এরপর ক্ষমা চান এবং ভুল স্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। তারা সেখানেই ভেঙে ফেলা কয়েকটি গ্লাসের ক্ষতিপূরণ দেন। তারপর মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। 

বারের কর্মচারীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতা হৃদয়ের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা বারে গিয়ে প্রায়ই দাম না দিয়ে মদপান করেন। বিষয়টি নিয়ে বার কর্মচারীদের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই ঝামেলা হয়। 

অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্যের জন্য বেশ কয়েকবার ছাত্রলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ হৃদয়ের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। 
 
এ বিষয়ে রাজপাড়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাবিল হাসান বলেন, ‘আমি বাইরেই ছিলাম। কর্মচারীদের সেভাবে মারধর করেননি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে দুটি মোবাইল ভেঙে যাওয়ায় সেগুলো আমরাই মেরামত করে দিচ্ছি। আর যা ক্ষতি হয়েছে সেগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এরপর মুচলেকা দিলে পুলিশ নেতা-কর্মীদের ছেড়ে দিয়েছে।’ 
 
রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘আমাদের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয়ের নেতৃত্বে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। আমি কথা বলতে হৃদয়কে ফোন করেছি। কিন্তু ফোনে পাইনি। বিষয়টি নিয়ে আমি সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’ 

রাজশাহী পর্যটন মোটেল বারের ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘অনেকেই মদ পানের পর মাতলামি করেন। এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরাও এমনটিই করেছেন। তারা বেশ কিছু ক্ষতি করেছেন। ক্ষতিপূরণ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে না, মর্মে পুলিশের কাছে মুচলেকা দেওয়ায় তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।’ 
 
নগরীর রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজল নন্দী জানান, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ক্ষমা চেয়েছেন, ক্ষতিপূরণও দিয়েছেন। তাই বার কর্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ দেয়নি। এ জন্য তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video