ঢাকা , শুক্রবার, ২০২৫ Jun ০৬, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
#

দেশজুড়ে

হাওরবাসীর স্বপ্নপূরণ: মেঘনার বুকে এক কিলোমিটারের সেতু

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : শনিবার, ২০২৫ মে ৩১, ০৫:০৭ অপরাহ্ন
#

কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত উপজেলা অষ্টগ্রামে মেঘনা নদীর ওপর এক হাজার মিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে। এ সেতুর কাজ শেষ হলে এক সময়ের বিচ্ছিন্ন জনপদ হাওরে সারা বছর চার চাকার গাড়ি চলবে, গাড়িতেই যাতায়াত করা যাবে শহরে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম—এই দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতে আমূল পরিবর্তন আনবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে জমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে সেতুটির নির্মাণ কাজ কিছুটা বিলম্ব হলেও বর্তমানে কাজ চলমান রয়েছে। এরইমধ্যে ২৬টি পিলারের মধ্যে ১৬টি পিলারের কাজ সম্পূর্ণ করে ৩৫ শতাংশ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা কর্তৃপক্ষের।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর ১৭৭ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার ১০৮ টাকা ব্যয়ে অষ্টগ্রামের বাঙ্গালপাড়া মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর কাজ শুরু করে তমা কনস্ট্রাকশন নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের বাঙ্গালপাড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে এটি একটি মাইলফলক হবে।

অষ্টগ্রাম উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মনির হোসেন বলেন, ‘এই ব্রিজটি হওয়ার আগে আমরা যদি ঢাকা বা অন্য কোনো জেলায় যাইতে চাই, তাহলে ৩ ঘণ্টার জায়গায় ৫ ঘণ্টা লেগে যেত। আগে এখান থেকে বিশ্বরোড যেতে ৩ ঘণ্টা লাগত, আর এখন ব্রিজটি হলে ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগবে। এতে করে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।’

উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, ‘এই ব্রিজটি হলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে। আমরা ভাটি অঞ্চলের মানুষ। আমরা যদি একটি রোগী নিয়ে যাই, তাহলে ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগে ঢাকায় যেতে। এই ব্রিজটি হলে ২-৩ ঘণ্টায় আমরা যেতে পারব। যাতায়াতের সুবিধা হলে আমাদের হাওরের ধানের ন্যায্যমূল্য পাব।’

অষ্টগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ রেজাউল হক বলেন, ‘সেতুর কাজ চলমান আছে। জমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও স্থানীয় লোকজনের বাধায় কিছুটা বিলম্ব হলেও এখন দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। আশা করি আগামী বছরের শুরুর দিকে কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে আমার বিশ্বাস।’

কিশোরগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘অষ্টগ্রামের বাঙ্গালপাড়ায় ১ কিলোমিটার সেতুর কাজ বর্তমানে এগিয়ে চলছে। এই সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর—এই দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতের বড় একটি মাধ্যম হবে। জেলা শহর ও হাওর অঞ্চলের মানুষ রাজধানী ঢাকা সহ অন্যান্য জেলায় সহজে যাতায়াত করতে পারবে। হাওর অঞ্চলের মানুষ এর আগে লঞ্চ বা ট্রলারে এক রাত যাপন করে পরদিন গ্রামে আসতে হতো। আর এখানে এ সেতু নির্মাণ হলে রাজধানী ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কপথে সারাবছর যোগাযোগ করা যাবে। এর ফলে হাওরের কৃষি পণ্য ও মিঠা পানির মাছের ন্যায্যমূল্য পাবে হাওরবাসী।’

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video