কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় নিহা ব্রিকস্ ফিল্ড বন্ধের হুমকি দিয়েছে সংঘবদ্ধ চক্র। চাঁদা না পেয়ে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে-এমন অভিযোগ করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত চিঠি দিয়েছে তারা। এর প্রতিকার চেয়ে চক্রের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কাশিনগর ইউনিয়নের জুগিরকান্দি মৌজায় অবস্থিত নিহা ব্রিকস্ এর মালিক মোঃ নাদিম।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কাশিনগর ইউনিয়নের দাতামা গ্রামের আবদুল্লাহ আল মানছুর, জুগিরকান্দি গ্রামের আবদুল কাদের ও রুহুল আমিন দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে নিহা ব্রিকস্ এর মালিক মোঃ নাদিমের নিকট চাঁদা দাবি করে। এরই ধারাবাহিকতায় চক্রটি বিভিন্ন লোক মাধ্যমে হুমকি ধমকি প্রদান করে। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আবদুল্লাহ আল মানছুর, রুহুল আমিন ও আবদুল কাদেরসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জন নিহা ব্রিকসের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে মালিকের ভাই নাহিদ ও ওমর ফারুকের নিকট ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সংঘবদ্ধ আক্রমণ করে এবং প্রকাশ্যে হুমকি দেয়, চাঁদার টাকা না দিলে নিহা ব্রিকস্ বন্ধ করে দিবে। কোন শ্রমিককে কাজ করতে দিবে না এবং ফিল্ডের মালামাল নষ্ট করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করবে বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আবদুল্লাহ আল মানছুরসহ চাঁদাবাজরা বিভিন্ন সরকারি অফিসে নিহা ব্রিকসের নামে নানা ধরনের মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ ও আপত্তি করে হয়রানী করছে।
সোমবার দাতামা গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে অবস্থিত নিহা ব্রিকস। এটার কারণে এলাকার কোন ক্ষতি হচ্ছে না।
জয়নাল আবেদীন নামের একজন বলেন, নিহা ব্রিকসের দেড় কিলোমিটারের ভিতরে সবুজের সমারোহ। এর আশপাশে জনবসতি নেই।
আলকাছ নামের এক কৃষক বলেন, আমাদের এলাকায় মাত্র একটি ইটভাটা রয়েছে। নিহা ব্রিকস্ ফিল্ডের চারদিকে সুন্দর পরিবেশ। যা চৌদ্দগ্রামের কোথাও আছে বলে মনে হয় না।
অলিপুর গ্রামের ড্রাইভার আমিন বলেন, ব্রিকস্ ফিল্ড থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়। চাঁদার টাকা না পেয়ে স্থানীয় কিছু লোক ব্রিকস ফিল্ডের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা করছে।
অভিযোগের বিষয়ে আবদুল্লাহ আল মানছুর বলেন, ‘নিহা ব্রিকস্ ফিল্ডের মালিকপক্ষ ফসলি জমি ও খালের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন তাতে বাধা দিয়েছে। কোন প্রকার চাঁদা দাবি করা হয়নি’।
চৌদ্দগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক শওকত হোসেন বলেন, ‘চাঁদা সংক্রান্ত একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।
উল্লেখ্য, আবদুল্লাহ আল মানছুর কখনো গোয়েন্দা পুলিশ, কখনো সাংবাদিক, কখনো বিএসটিআই কর্মকর্তা বা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্নস্থানে চাঁদা দাবি করে আসছে। ইতোপূর্বে চাঁদা আদায়কালে সে গ্রেফতারও হয়েছে। পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে এসে আবারও চাঁদাবাজি করছে। তাকে আইনের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
মন্তব্য করুন