চট্টগ্রামের পটিয়ায় ওরশ মাহফিলকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হিলচিয়া হাতিয়ারঘোনা কাজী এবাদুল্লাহ শাহ (র.)-এর ওরশ ও মসজিদ কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। উভয় পক্ষের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছর ধরে অসংখ্যবার গুলির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় পক্ষদ্বয়ের মধ্যে ২০-২৫টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
২০২২ সালের ১২ এপ্রিল পটিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউএনও, ওসি, বিরোধীয় পক্ষের প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠকের পর বিরোধীয় সকল কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এ সময় আবুল বশর, জালাল উদ্দিন ও মনজুরুল ইসলাম কাজলকে নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠন করে দেয় উপজেলা প্রশাসন।
সম্প্রতি মোনাফ পক্ষ মসজিদের দানবাক্স দখল করে। ২০২২ সালের ২ জুন (শুক্রবার) জুমার নামাজে টানটান উত্তেজনা দেখা দিলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ শেষ হয়।
আগামী শুক্রবার (২১ মার্চ) কাজী এবাদুল্লাহ (র.)-এর বার্ষিক ওরশ শরীফ। এ উপলক্ষে মসজিদের মাঠ ব্যবহারকে কেন্দ্র করে আবারও উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় হাতিয়ারঘোনা এলাকার সচেতন নাগরিক বাহাদুর ইসলাম খান জানান, আবদুল মোনাফ নামের এক ব্যক্তি, যার পূর্বপুরুষের নামে হিলচিয়া ও হাতিয়ারঘোনা মৌজায় আরএস, বিএস কোনো খতিয়ান নেই, তিনি জোরপূর্বক মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল দখল করতে চান। বিগত দুই বছর যাবত সংঘর্ষ এড়াতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মসজিদের মাঠে কোনো পক্ষকে মাহফিল করতে দেওয়া হয়নি।
একই এলাকার বাসিন্দা মোজাহের মিয়া জানান, মসজিদের চারপাশের সম্পত্তিতে মোনাফ গংদের কোনো মালিকানা নেই।
বিগত বছরগুলোতে মাঠের দক্ষিণ পাশে ওরশ কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম খান পক্ষ ও উত্তর পাশে মোনাফ পক্ষ ওরশ মাহফিল পরিচালনা করে আসছিল। এই বছর হঠাৎ মোনাফ পক্ষ মাঠে তাদের মাহফিলের প্রস্তুতি নেওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এক পক্ষের সভাপতি নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রতিপক্ষ মোনাফ গং মাঠ ব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানুর রহমান জানান, গত বছর যে পক্ষ যেখানে মাহফিল করেছে, এই বছরও সেখানে করার নির্দেশনা দিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শান্তি বজায় রাখতে আন্তরিক।
মন্তব্য করুন