ঢাকা , শুক্রবার, ২০২৫ মে ১৬, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
#

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভ্যাপসা গরম, চট্টগ্রামে ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি-কাশি

টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : সোমবার, ২০২১ সেপ্টেম্বর ২৭, ০১:৪৮ অপরাহ্ন
#

চট্টগ্রামে ঘরে ঘরে জ্বর ও সর্দির প্রকোপ বেড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ ও চিকিৎসকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কারণ করোনা সংক্রমণের হার কমলেও পুরোপুরি এখনো চলে যায়নি। তার উপর ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাবও রয়েছে। এছাড়া জ্বর ও সর্দির কারণে চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বেড়েছে রোগীর চাপ। খবর: পূর্বদেশ

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে জ্বর ও সর্দির প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। এর ফলে অনেকেই বুঝতে পারছে না সেটি সাধারণ জ্বর না কি করোনা। কারণ করোনার ক্ষেত্রে জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গ যেমন দেখা যায়, সাধারণ জ্বরের ক্ষেত্রেও প্রায় একই উপসর্গ দেখা যায়। কিন্তু অনেক সময় করোনায় আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থা খুব দ্রুত খারাপ হতে পারে। কিন্তু সাধারণ জ্বরের ক্ষেত্রে অতীতে কোনও অসুখ না থাকলে শারীরিক অবস্থা খুব একটা জটিল হয় না। পাশাপাশি সাধারণ জ্বরের ক্ষেত্রে সাধারণত শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দেয় না। এই সময়ে নিয়ম মেনে সাবধানে থাকলে জ্বর ও সর্দি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

এছাড়া তীব্র গরম মানুষের স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার ওপরও প্রভাব ফেলছে। এর ফলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছে মানুষ। বাড়ছে রোগব্যাধি। চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি। শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া বেশি আর ডায়রিয়া কমবেশি সবার।

জানা যায়, সারা বিশ্বে যখন করোনা ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে ঠিক সেই সময় অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। যেমম ডেঙ্গু, সাধারণ জ্বর ইত্যাদি। সাধারণত প্রতি বছরই সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এই সময়ে ঋতু পরিবর্তন হয় এবং আবহাওয়ার দিক থেকে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। সে কারণে এই রোগগুলির প্রাদুর্ভাব ঘটে। এবং নির্দিষ্ট সময় পর নিজে থেকেই এই রোগগুলি চলে যায়।

তাছাড়া পরিবেশের তাপমাত্রা বেশি বাড়লে জ্বর, কাশি, সর্দি, অবসাদ, এলার্জি, ফুড পয়জনিং বা বদহজমের কারণে বমি বা ডায়রিয়া, শরীরে পানিশূন্যতা ও হিটস্ট্রোক ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। আর গরমে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর লবণ ও পানি হারায় আমাদের ত্বক। এই পানির ঘাটতি পূরণ না করলে পানিশূন্যতা হতে পারে। এর লক্ষণ হিসেবে মাথা ঝিমঝিম করে, ক্লান্তি লাগে, প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যায়। এ রকম পরিস্থিতিতে বারবার পানি পান করতে হবে। আর শসা, লেবু-পানি, ডাব ইত্যাদি ফল বেশি বেশি খাওয়া উচিত বলে জানান চিকিৎসকরা। অ্যালকোহল, চা-কফি বরং এড়িয়ে যাওয়া ভালো। কেননা, এগুলো শরীরে পানিশূন্যতা বাড়ায়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর ও সর্দির প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এটা রোগীর অভিভাবক ও চিকিৎসকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। যেহেতু করোনা এখনো চলে যায়নি। এসব রোগগুলো করোনার লক্ষণ হওয়ায় আসলে বলা যাচ্ছে না। তবে আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে এসব রোগ হয়ে থাকে। এসবে কেউ আক্রান্ত হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তা না হলে বিপদ হওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে। সেই সাথে ডেঙ্গুর ভয়ও মানুষের মাঝে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। তাই সবাইকে সতর্কভাবে জীবনযাপন করতে হবে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। এসময়ে জ্বর, সর্দি হচ্ছে প্রায়। পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ছে। শিশুদের জ্বর, সর্দি ও কাশি হচ্ছে। দিনে গরম আর রাতে ঠান্ডা একারণে ভাইরাসজনিত রোগও হচ্ছে। তবে খুব সিরিয়াস কিছু না। একটু বাড়তি সর্তকতা অবলস্বন করলে সুস্থ থাকা সম্ভব।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, গরমের কারণে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া বেশি আর ডায়রিয়া কমবেশি সবার। এছাড়া গরমের কারণে এলার্জি, ফুড পয়জনিং, ভাইরাস জনিত রোগ হতে পারে। তাই সর্তক থাকা উচিত।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video