ঢাকা , সোমবার, ২০২৪ Jun ২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১
#

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাঁশখালীতে চাঁদা না পেয়ে জায়গাদখল করে ঘর নির্মাণ চেষ্টার অভিযোগ

বাঁশখালী প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০২৪ মে ২৮, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন
#

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাধনপুরে চাঁদা না পেয়ে জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২৮ মে (মঙ্গলবার) উপজেলার সাধনপুর ইউপির ৬ নং ওয়ার্ড এলাকার ঈদগাহ ও জানাজার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায়, ওই এলাকার মৃত আমির হামজার পুত্র আহমদ হোসন ও আলী হোসেন বিএস জরিপের ৫০৮ নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক উক্ত খতিয়ানের ৪৭৫২, ৪৭৫৪ ও ৪৭৫৫ দাগের জায়গায় বসতঘর নির্মাণ করিয়া শতবছর যাবৎ বসবাস করিয়া আসিতেছে এবং  অবশিষ্ট জায়গাতে বিভিন্ন ফলজি গাছ রোপণ এবং ক্ষেতখোলা করিয়া পরিবারের খরচ নির্বাহ করিয়া থাকেন। এছাড়াও গত ১৫ সনে উক্ত আহমদ হোসেন এর ছেলে রিদওয়ানুল হক (প্রবাসী) ও মোঃ জিয়াউল হক (প্রবাসী) বিএস রেকর্ডীয় মালিক আব্দুল জব্বার, আব্দুস সালাম এর কাছ থেকে খরিদা দলিল নং ১৯০৮ মূলে বিএস নামজারি খতিয়ান ৩৩৫৪ এর বিএস ৪৭৪৮ ও ৪৭৪৯ দাগের জায়গা খরিদ করেন, একই ভাবে বিএস রেকর্ডীয় মালিক আব্দুল মোনাফের ওয়ারিশদের কাছ থেকেও জায়গা ক্রয় করিয়া আপোষ চিহ্নিত মতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোগদখলে আছেন।

এরই মধ্যে সাধনপুর বন বিট অফিসে দায়িত্বরত ফরেস্ট মোঃ এহসানুল করিম উক্ত জায়গা সরকারি জায়গা বলে দাবি করে প্রবাসী রিদওয়ানুল হক ও জিয়াউল হকের পরিবার থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের, প্রবাসী রিদওয়ানুল হক স্ত্রী শাকিলা সুলতানা ও জিয়াউল হকের স্ত্রী রীনা আক্তার বলেন, ফরেস্টর এহসান আমাদের ঘরে এসে আমাদের জায়গাটি সরকারি জায়গা বলে দাবি করে বেশ কিছুদিন যাবৎ ২লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। তার দাবি অনুযায়ী ২ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে এই জায়গা থেকে আমাদের উচ্ছেদ করা হবে মর্মে হুমকিও প্রদান করেছে এহসান।কিন্তু আমাদের ঘরে কোন পুরুষ মানুষ নাই এবিষয়ে আমরা মহিলা মানুষ কিছুই বলতে পারবোনা বলাতে উক্ত চাঁদার টাকার জন্যে তার স্ত্রী নাজমা আক্তারকেও একেএকে ৩বার আমাদের ঘরে পাঠিয়েছে এহসান। এতে আমরা চাঁদা দিতে না পারায় অনধিকারে আমাদের বসতভিটায় প্রবেশ করিয়া প্রথমে গাছের কাঁঠাল ও লিচু নিয়ে যায় এহসান এবং ঘেরাবেড়া ভাংচুর করে সন্ধ্যা নাগাদ জায়গা জবরদখল করে ঘর নির্মাণের চেষ্টা করে যাচ্ছে ওই বিট কর্তা।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের ৭৫ বছর উর্ধ্বে বয়সী রাজিয়া বেগম বলেন, এহসান নামে ওই ফরেস্ট আমাদের ঘরে এসে ২লাখ টাকা দাবি করেছে, তার স্ত্রী নাজমা আক্তারকেও ৩ বার পাঠিয়েছে। আমরা টাকা দিতে না পারায় অভিযুক্ত এহসান আমার ছেলের বৌকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে এহসান। তার এহেন অসাদাচরণের বিষয়টি আমার ভাই কামাল উদ্দিনকে জানিয়েছি। যার ফলে এহসান ক্ষুদ্ধ হয়ে আমাদের জায়গা দখল করে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রীকে বন কর্তা এহসানের কূপ্রস্তাবের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ফলে পুরো এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে পরিদর্শনে ওই জায়গায় নতুন ভাবে ঘর নির্মাণের দৃশ্য দেখা গেছে। তাদের মালিকানা সপক্ষে খতিয়ান ও দলিলাদি প্রতিবেদকের কাছে প্রদান করেন তারা।

এসময় ঘটনাস্থলে যান বন বিট কর্তা এহসান,তার কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জায়গাটি আমি ক্রয় করেছি, কার কাছ থেকে কিনেছেন? জানতে চাইলে তিনি আমতা করে বলেন, জায়গা আমি দখল করিনাই, মেম্বার দখল করে দিয়েছে, মেম্বার কিভাবে দখল করে দিলো? এবং কার কাছ থেকে কিনছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এহসান আমতা আমতা করে বলেন, এখানে সরকারি ছরার জায়গাও আছে, এবিষয়ে এসিল্যান্ড সারের কাছে অভিযোগ আছে বলেও জানান এহসান।

এসময় স্থানীয় নুরুল হোসেন, মোঃ কামাল, আবুল মনছুর, মোস্তাক আহমদসহ বেশ কয়েকজন লোক এহসানকে চাঁদাদাবি ও প্রবাসীর স্ত্রীকে কূপ্রস্তাব দেয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়ার সাথে সাথে মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত চলে যান এহসান।

এবিষয়ে জানতে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি আব্দুল খালেক পাটোয়ারীর সাথে যোগাযোগের একাধিক বার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video