ঢাকা , সোমবার, ২০২৪ মে ১৩, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
#

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক


প্রকাশিত : রবিবার, ২০২৪ এপ্রিল ২৮, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন
#

চুয়েটে আন্দোলনের সময় গাড়ি ভাংচুর, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনার জেরে এবার চার দফা দাবীতে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

গত ২২ এপ্রিল বিকেলে ব্যস্ততম চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের  চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের জিয়ানগর এলাকায় শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় মোটর সাইকেলে আরোহী চুয়েটের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২০) ও তৌফিক হোসেনের (২১) মৃত্যুর জের ধরে টানা চার দিন ধরে বিক্ষুব্ধ চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গাড়ি ভাংচুর, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনায় এবার ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সংগঠনের কার্যালয়ে সংগঠনের আহবায়ক মনজুরুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভা শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট চলাকালে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর, কক্সবাজার এবং তিন পার্বত্য জেলায় বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও অটোটেম্পু চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। জরুরি সভায় মালিক-শ্রমিকদেরকে ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট সফল করার আহবান জানান নেতৃবৃন্দরা। জরুরি সভায় বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মুছাসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। জরুরি সভা থেকে চার দফা দাবিতে ৪৮ ঘন্টা পরিবহন ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত হয়।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের চারদফা দাবীসমূহ হচ্ছে-

১. যখন তখন বাস মালিক ও কর্মচারী গ্রেফতার করা যাবে না এবং বাস মালিক ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

২.চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে সড়ক দুর্ঘটনা কে কেন্দ্র করে বাস পোড়ানো ও বাস চলাচলে বাধাদান কারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩.সড়ক দুর্ঘটনায় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।

৪.সড়ক মহাসড়কে চলাচলরত অনুমোদনহীন অযাচিত বাস চলাচল বন্ধ করতে হবে।

এই বিষয়ে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মোটর মালিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ হোসেন কোম্পানি বলেন, ৪৮ ঘন্টা পরিবহন ধর্মঘটের সিন্ধান্ত হয়েছে।

উল্লেখ্য, সড়ক দুর্ঘটনায় চুয়েটের দুই মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত ২২ এপ্রিল বিকেলের পর থেকেই চুয়েটে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিরাপদ সড়ক সহ দশ দফা দাবীতে টানা চারদিন চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আন্দোলন করেছে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে শাহ আমানত পরিবহনের বেশ কয়েকটি গাড়ী আটক করার পর গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে চুয়েটের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান নিয়ে ভিসির কার্যালয়ে তালাও ঝুলে দিয়ে আধঘন্টা পর তালা খুলে দেয় আন্দোলনকারীরা। আন্দোলন চলাকালে গত ২৫ এপ্রিল একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভার সিন্ধান্ত মোতাবেক বিকেলে চুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চুয়েটের পরীক্ষাসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য  বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে ছাত্র এবং শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। এই নির্দেশনা অমান্য করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চুয়েটে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরে পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে বৈঠকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করায়

বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভার সিন্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা জানান চুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। শুক্রবার বিকেল তিনটায় চুয়েট সিন্ডিকেটের ১৩৩তম জরুরি সভায় ৯ মে পর্যন্ত চুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ)বন্ধ ঘোষণার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সময় হলত্যাগের পূর্বের নির্দেশনা স্থগিতের সিন্ধান্ত হয় বলে চুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video