মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী, স্বাধীনতা বিরোধী এবং দেশ বিরোধী একটি অশুভ শক্তি ঘৃণ্য প্রতিহিংসার রাজনীতি ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করে বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জাতির পিতার কন্যাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার এমনকি সুযোগ পেলে তাঁর জীবন নাশেরও এক বিরামহীন পরিকল্পনা হয়তো তাদের রয়েছে।
জাতির পিতার পবিত্র রক্ত জননেত্রী শেখ হাসিনার ধমনীতে প্রবাহিত। ১৯৮১ সালে পিতার স্বপ্ন পূরণে দিগন্ত আলোকিত করে গর্বিত কন্যা - বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার আবির্ভাব। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা হবে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত, অসম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মানবিক বাংলাদেশ। জাতির পিতার এই স্বপ্ন পূরণে জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জীবন বাজি রেখে তিনি জনগণের কাছে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাচ্ছেন।
পিতার স্বপ্ন পূরণের মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ, অসীম সাহসী ও দৃঢ় মনোবলের অধিকারী শেখ হাসিনা একাই দেশটাকে টেনে একের পর এক উন্নয়নের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যাচ্ছেন। বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্বাস করে দেশের স্বার্থ ও জনগণের স্বার্থই জননেত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র লক্ষ্য এবং এই লক্ষ্য পূরণে তিনি অবিচল ও অপ্রতিরুদ্ধ। মানুষ বিশ্বাস করে জাতির পিতার কন্যা অকুতোভয়, উদারচিত্ত ও মানবিক। তাই আজ তাঁর সততা ও নিষ্ঠা নিয়ে দেশের জন্যে তাঁর ত্যাগ নিয়ে কারো মনে কোন প্রশ্ন নেই।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়ে এবং জনগণকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ গর্বিত। তারা মনে করে কোন অশুভ শক্তির বা স্বার্থনেশি মহলের ফন্দিবাজি, তাদের মিথ্যা অপবাদ বা ক্ষমতা দখলের আস্ফালন জননেত্রী শেখ হাসিনার কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। বরং মানুষ তাদের পরান্নভোজী ফন্দিবাজ হিসাবেই চিহ্নিত করেছে।
মিথ্যা অনুসন্ধানী রিপোর্টে কোন কাজ হবে না। জাতির পিতার কন্যার বিচরণ জনগণের হৃদয়ের গভীরে। তাঁকে থামিয়ে দেওয়ার কোন প্রচেষ্টাই সফল হবে না। ওদের তো একটাই ভয়-মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যে ভাবে দেশটাকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন-তাঁর এই যাত্রা যদি অব্যাহত থাকে তা হলে তো বঙ্গবন্ধু কন্যা বিশ্বের কিংবদন্তি নেতা হবে-একটি বিস্ময়কর ইতিহাসের সৃষ্টি হবে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অর্জন কোনদিন মুছে ফেলা যাবে না। স্বপ্নের মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু, ডিজিটাল বাংলাদেশ, অবিশ্বাস্য বিদ্যুৎ উৎপাদন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, ১০০টি অর্থনৈতিক জোন, পায়রা সমুদ্র বন্দর, সমুদ্র জয়, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, কমিউনিটি ক্লিনিক, নতুন স্থাপিত মেডিকেল কলেজ সমূহ, শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, নিউরো সাইন্স ইনস্টিটিউট, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, শেখ আবু নাসের স্পেশালাইজড হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ল্যাবরেটরি মেডিসিন এন্ড রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা, চিটাগাং, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনায় মেডিকেল ইউনিভার্সিটি - এ ধরণের আরো অনেক অর্জন তো সর্বজন বিদিত হয়েছে। বাংলার মাটিতে মানুষের হৃদয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার অবস্থানকে চিরস্থায়ী করে ফেলেছে।
বর্তমানে বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার বিশালতা, দেশকে নিয়ে তাঁর স্বপ্ন দেখা এবং আগামী দিনে দেশের জন্যে তাঁর মহাপরিকল্পনা বুঝা বা অনুধাবন করার ক্ষমতা তো ওদের কোনদিন হবে না। দেশ বিদেশে বাংলাদেশের কিছু মানুষ কেন জানি বর্তমান সরকারের করা বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখেও না দেখার ভান করছেন। তারা হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা কিছুই না জেনে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন। যেখানে অনেক বিদেশী রাষ্ট্রনায়করাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী সাফল্যে বিস্মিত হয়ে স্বয়ং তাঁকেই প্রশ্ন করে - তাঁর সাফল্যের রহস্য জানতে চান। এই প্রশ্নের উত্তর তো বঙ্গবন্ধু কন্যা বরাবরই একটাই দেন - "আমি আমার দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসি এবং দেশ ও দেশের মানুষের কল্যানে আমি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।"
ইতিমধ্যে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিয়ে জনগণের মনে একটি চমৎকার অনুভূতি কাজ করছে। দেশে সকল স্তরের মানুষ মনে করে যে আগের বাংলাদেশ আর নেই। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অপ্রতিরুদ্ধ গতিতে অগ্রযাত্রার মহাসড়কে বাংলাদেশ - একটি অত্যন্ত শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী পরিকল্পনার ফলে বিশ্বকে চমকে দেওয়ার মত আরো বহু সাফল্য বাংলাদেশের রয়েছে।
১। বাংলাদেশে এখন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শতভাগ ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয়।
২। দেশের ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ইতিমধ্যে জাতীয়করণ করা হয়েছে।
৩। শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ফলে দেশের শতভাগ শিশুর শিক্ষা সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে।
৪। ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্মিত ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে দেশের মানুষ ৩২ রকমের ঔষধ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাচ্ছে।
৫। বর্তমান সরকারের গণমুখী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ফলে দেশে মাতৃ মৃত্যু, শিশু মৃত্যু ও নবজাতকের মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে বর্তমানে ৭২.৮ বছর হয়েছে।
৬। বাংলাদেশে এখন ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের ৮০% নারী, কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মীদের ৮০% নারী কর্মী এবং পোশাক শিল্পে সিংগভাগই নারী কর্মী।
৭। দেশে নারী ও শিশু স্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নয়নের জন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।
৮। বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে মানুষ এখন ডিজিটাল সেন্টার, ই-পেমেন্ট ও মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা পায়। বাংলাদেশের ১৩ কোটি মানুষ এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ও প্রায় ১২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
৯। ১৭ কোটি জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ।
১০। স্বল্প সুদে অভিবাসন ঋণ সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ বিদেশে শ্রমিক প্রেরণ করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
১১। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ বিশ্বজুড়ে খ্যাতি ও সম্মান অর্জন করেছে।
১২। বাংলাদেশে এখন সর্বত্র নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকে। পোশাক শিল্পের পাশাপাশি জাহাজ ও ঔষধ শিল্পে, আইটি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করণে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে অভূতপূর্ব সুনাম কুড়িয়েছে।
১৩। হত দরিদ্র মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসাবে বাংলাদেশ সরকার বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ও দুঃস্থ মহিলা ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতা চালু করেছে।
১৪। জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি গৃহহীন মানুষকে গৃহ প্রদানের এক ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রায় এক লক্ষ্য পঁচিশ হাজার গৃহহীনকে গৃহ প্রদান করা হয়েছে।
এতসব অর্জনের পর বর্তমান বাংলাদেশের জনগণের মনে বঙ্গবন্ধু কন্যার আসন দেশ বিরোধী কোন অশুভ শক্তি এতটুকুও টলাতে পারবে না। এতে কারো মনে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। আমাদের বঙ্গকন্যার আলো এখন দিগন্ত প্রসারিত। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও কূটনৈতিক দক্ষতার কোন বিকল্প নাই। মানুষ মনে করে ব্যক্তি শেখ হাসিনা সকল সমালোচনার উর্ধ্বে।
তাই দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে আস্থা ও বিশ্বাসের সাথে বলতে চাই - আপনারা যারা দেশের বিরুদ্ধে বিনা কারণে কুৎসা রটনায় ব্যস্ত এবং দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত - দয়া করে আপনাদের আজগুবি চিন্তা ও আষাঢ়ে গল্প বলা বন্ধ করুন। এসব করে বাংলাদেশের মানুষের মন বিষিয়ে তোলা যাবে না, বিশ্বাসও অর্জন করা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক শান্তিতে আছে - তাদের অশান্তির বার্তা দিবেন না। এদেশের গরিব দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে জাতির পিতার কন্যা বজ্রকঠিন সংকল্প আর দৃঢ় অঙ্গীকারে ছুটে চলেছেন দুনির্বার।
যারা সরকারের চরিত্র হননে ব্যস্ত সময় পার করছেন, গুজব ছড়িয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে ঘায়েল করতে সচেষ্ট তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই - শেখ হাসিনার প্রতি মুহূর্তের মূল্য অনেক বেশি। পারলে গঠনমূলক সমালোচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সাহায্য করুন আর না হয় দেশের স্বার্থে অনুগ্রহ করে চুপ থাকুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কাজ করতে দিন - আপনাদের সন্তানদের জন্যে, আমাদের সবার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে। একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানে এখন জননেত্রী শেখ হাসিনাকেই আমাদের দরকার। তাঁর বিকল্প এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নেই।
জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পদে পদে বাধাগ্রস্থ হয়েই পথ চলতে হয়েছে। বার বার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যে যারা মন থেকে খুশি হতে পারেন না - আপনাদের অভিপ্রায় স্পষ্ট। জাতির পিতার কন্যার জনপ্রিয়তার কাছে আপনাদের অস্তিত্ব সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় আপনাদের মনে হারিয়ে যাওয়ার ভয়।
"যে জীবন অপরের জন্যে না সেটি কোন জীবন না।" বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার জীবনটিও তো অনেক আগেই এদেশের মানুষের জন্যে বিলিয়ে দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সততা দিয়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করেছেন, কঠোর শ্রম, চেষ্টা ও ত্যাগের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সফল নেতা হয়েছেন। জেদ ও আত্মবিশ্বাসই তাঁর সফলতার মূল।
জাতির পিতার গর্বিত উত্তরাধিকার জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের প্রিয় জন্মভূমির সাথে কোনদিন প্রতারণা করবে না - দেশের মানুষ তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে। দেশ বিরোধী অপশক্তির সমালোচনা যত বেশি হবে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কাজের সফলতা ততই বেড়ে যাবে - মানুষের হৃদয়ে তাঁর অবস্থান আরো বেশি গ্রথিত হবে। জাতির পিতার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের জন্যে শ্রেষ্ঠত্বের পরীক্ষায় সর্বদা উত্তীর্ণ হয়েছেন। মহান আল্লাহর উপর শেখ হাসিনার রয়েছে অগাধ বিশ্বাস। কাজেই তাঁর পথ রুদ্ধ করে সাধ্য কার?
তাই তো একজন বাঙালি হিসাবে আজ গর্বভরে বলতে চাই -
"মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি বঙ্গবন্ধুরই লোক, আমি শেখ হাসিনারই লোক, আর কিছু নয়। সে মোর প্রথম পরিচয়, এই হোক শেষ পরিচয়।"
লেখক: চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সাবেক মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মন্তব্য করুন