ঢাকা , রবিবার, ২০২৫ এপ্রিল ২০, ৭ বৈশাখ ১৪৩২
#

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রাউজানে লক্ষ্মীনারায়ণ ও জ্বালামূখী মন্দিরে মহোৎসব অনুষ্ঠিত

মিলন বৈদ্য শুভ, রাউজান প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম।
প্রকাশিত : শনিবার, ২০২৫ ফেব্রুয়ারী ১৫, ০৫:৩০ অপরাহ্ন
#

রাউজানের উত্তর গুজরাস্থ ঐতিহ্যবাহী শ্রীশ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ ও শ্রীশ্রী জ্বালামূখী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অষ্টপ্রহরব্যাপী মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, পবিত্র গঙ্গা পূজা, পাল্টা কীর্তন, নগরকীর্তন, অন্নপ্রসাদ বিতরণ এবং অষ্টপ্রহরব্যাপী মহানাম সংকীর্তন অনুষ্ঠিত হয়।

মন্দিরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজনের শুরুতেই মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়। পবিত্র গঙ্গা পূজায় উপস্থিত ভক্তরা পূজারী ও পুরোহিতদের সঙ্গে মন্ত্রোচ্চারণ করে গঙ্গার অর্ঘ্য প্রদান করেন।

উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু ছিল অষ্টপ্রহরব্যাপী শ্রীশ্রী শুভ তারকব্রহ্ম মহানাম সংকীর্তন, যা নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে থাকে। ভক্তবৃন্দ গভীর শ্রদ্ধা ও ভক্তি নিয়ে এতে অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় উৎসব উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা আশীষ চক্রবর্তী, সাতকড়ি সেন, শিবু বিশ্বাস ও দীপক সেন উপস্থিত ছিলেন।

উৎসব কমিটির সভাপতি লায়ন কৈলাশ বিহারী সেন, সমন্বয়ক চন্দন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক রুপম পালিত, রাউজান প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি যীশু সেন, অর্থ সম্পাদক সঞ্জয় সেন, জিতুল চক্রবর্তী, উজ্জ্বল দত্ত বাসু, রাজন সেন, প্রকৌশলী সুমন সেন, তাপস সেন প্রমুখ ব্যক্তিত্ব উৎসব পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

লায়ন কৈলাশ বিহারী সেন বলেন, "এই উৎসব আমাদের আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং সামাজিক ঐক্যের এক শক্তিশালী প্রকাশ। মায়ের আশীর্বাদে সমাজে শান্তি, ভালোবাসা ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভক্তি ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে আমরা শুদ্ধ জীবন ধারণ করতে পারি এবং মানবিক মূল্যবোধে উন্নতি ঘটাতে পারি।"

যীশু সেন বলেন, "বার্ষিক জ্বালামুখী মায়ের মহোৎসব আমাদের ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের শক্তি। মায়ের পূজা আমাদের জীবনে শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল নিয়ে আসে। এই আধ্যাত্মিক পরিবেশ আমাদের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।"

১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত শুভ গন্ধাধিবাসের অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত রঙিন ও ধর্মীয় আবেগে পূর্ণ। এদিন পৌরোহিত্য করেন চুনতী লোহাগাড়ার বৈষ্ণব প্রবর ধনঞ্জয় গোস্বামী। শুভ অধিবাস কীর্তন পরিবেশন করেন আশালতা কলেজের অধ্যাপক রাজীব বিশ্বাস, যার কীর্তনে উপস্থিত দর্শকগণ গভীর আধ্যাত্মিক অনুভূতিতে মগ্ন হন। দুপুর ১২টায় পাল্টা কীর্তন পরিবেশন করেন দীলিপ সরকার ও ঝুলন আচার্য।

১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মহানাম যজ্ঞে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভক্তরা অংশগ্রহণ করেন, বিশেষত চট্টগ্রামের জগন্নাথ সম্প্রদায়, খুলনার প্রভু দয়াল কৃষ্ণ সম্প্রদায়, খুলনার লোকনাথ সম্প্রদায় ও কুমিল্লার নব দেব বাণী সম্প্রদায়ের ভক্তরা সম্মিলিতভাবে মহানাম সংকীর্তন পরিবেশন করেন।

উল্লেখযোগ্য যে, এই মহোৎসবে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতি মন্দির চত্বরকে এক মহামিলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করে। ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যিক এই মহোৎসব রাউজানের ইতিহাসে এক স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video