বাংলাদেশের নারী ফুটবলের অন্যতম উজ্জ্বল তারকা আনাই মগিনী এবার নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করলেন।
আজ শনিবার (১৭ মে, ২০২৫) দুপুরে আনাই মগিনী খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষ থেকে নিয়োগপত্র গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা মাস্রাথোয়াই মারমা উপস্থিত ছিলেন।
নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে আনাই মগিনী খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নির্দেশে আনাই মগিনীকে জেলা পরিষদের চাকরি প্রদান করা হয়েছে, যা তার ফুটবল ক্যারিয়ারের পাশাপাশি নতুন দায়িত্বের সূচনা করেছে।
খাগড়াছড়ি জেলার সাতভাইয়া পাড়ার বাসিন্দা আনাই মগিনী দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের নারী ফুটবলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। তিনি জাতীয় দলের হয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন এবং দেশের জন্য গৌরব অর্জন করেছেন।
তার এই সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ তাকে চাকরি প্রদান করেছে, যা তার জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
চাকরি পাওয়ার পর আনাই মগিনী বলেন, "এটি আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আমি ফুটবলের মাধ্যমে দেশের সেবা করেছি, এখন প্রশাসনিক দায়িত্বের মাধ্যমে আরও কিছু করতে পারব।"
তিনি আরও বলেন, "এই সুযোগ আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করবে এবং আমি আমার কাজের মাধ্যমে খাগড়াছড়ির উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই।"
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, "আনাই মগিনী আমাদের জেলার গর্ব। তার ফুটবল দক্ষতা এবং দেশের জন্য অবদান অনস্বীকার্য। আমরা আশা করি, তিনি তার নতুন দায়িত্বেও সফল হবেন এবং আমাদের জেলার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।"
আনাই মগিনী একসময় বাংলাদেশের মহিলা ফুটবলার হিসেবে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছিলেন।
২০২১ সালে ভারতের বিপক্ষে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফাইনালে বিজয়ী গোল করে দেশের মহিলা ফুটবল ফেডারেশনে সুনাম অর্জন করেছিলেন।
কিন্তু দীর্ঘদিন অবহেলা এবং সুযোগ না পাওয়ার কারণে মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি ফুটবল ক্যারিয়ার শেষ করে নিজ শহর খাগড়াছড়িতে একটি দোকান চালিয়ে ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন।
অনেক বছরের সংগ্রামের পরও জাতীয় দলে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়ায় আনাই মগিনী এই কঠিন সিদ্ধান্ত নেন।
তার ছোট বোন আনুচিং মগিনীর ভাষ্যমতে, বারবার অবহেলা ও অনুপস্থিতির কারণে আনাই ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, "আমি ফুটবল খেলতে চাই এবং একই সঙ্গে আমার নতুন দায়িত্বও পালন করতে চাই। এটি আমার জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ, কিন্তু আমি প্রস্তুত।"
আনাই মগিনীর এই নতুন যাত্রা তার ভক্তদের জন্য আনন্দের খবর।
তার সাফল্য শুধু খাগড়াছড়ি নয়, পুরো দেশের জন্য গর্বের বিষয়।
ফুটবল মাঠের পাশাপাশি প্রশাসনিক দায়িত্বেও তিনি সফল হবেন—এটাই সকলের প্রত্যাশা।
মন্তব্য করুন