আড়াই লক্ষ টাকা না দেয়ায় এফ.আর হিমাচল পরিবহনের একটি এসি বাস গত ৯ দিন যাবত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটকে আটকে রেখেছিলেন শাখা ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী। গত ৬ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এফ.আর হিমাচল পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব; ১৫৭১-২২) বাসটি পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার এলাকা থেকে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আটকে রাখা হয়।
এ বিষয়ে এফ.বহনের এমডি নোমানের অভিযোগ, তাঁতিবাজার মোড় থেকে কোন কারণ ছাড়াই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমার গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় গেইটে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মেহেদী নামের একজন আমার কাছে আড়াই লক্ষ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত গাড়ি ছাড়া হবে না বলে জানায়।
তিনি আরও বলেন, আমি তাকে বলি আপনি আমার কাছে টাকা পান এমন কোন প্রমাণ দেখাতে পারেন তাহলে আমি আপনাকে ডাবল টাকা দিবো। তখন সে আমাকে বলে আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সবচেয়ে কাছের লোক। আমাকে কেউ কিছু করার ক্ষমতা নেই। টাকা না দিয়ে যদি এই নিয়ে বাড়াবাড়ি বা থানায় অভিযোগ করি তাহলে আমাকে দেখে নিবে বলে হুমকি দেয়।
তবে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদি চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। মেহেদি বলেন, বাস মালিক নোমানের বউ আমার এলাকার এক ছেলের সাথে চলে গিয়েছিল। পরে সে আমাকে আমাকে বলেছিলেন, তার বউকে তার কাছে এনে দিতে পারলে বিনিময়ে আমাকে বাইক, কক্সবাজারের এয়ার টিকেট, আমার গার্লফ্রেন্ডকে স্বর্নের চেইন ও ৪ দিন থাকা খাওয়ার খরচসহ আরও টাকা দিবে।
“পরবর্তীতে আমি নোমানের বউকে কৌশলে তার কাছে এনে দিয়েছিলাম। তারপর ২০ দিন নতুন করে ঘর সংসার করে তারপর নোমানের বউ আবার নোমানকে ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। এখন আমার কাজের পাওনা আমাকে দিতে হবে। কিন্তু নোমান টাকা না দিয়ে পালিয়ে চলে যাওয়াতে তাকে আর খুঁজে পাইনি। তারপর তাকে না পাওয়াতে তার গাড়ি আটকায় রেখেছি। নোমান টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাক।”
জানা যায়, গত ৬ মার্চ শাখা ছাত্রলীগ কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ বর্ষের দর্শন বিভাগের ছাত্র মেহেদীও তার সহপাঠীরা মিলে তাঁতীবাজার থেকে বাসটি আটক করে আনে। ৯দিন যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বাসটি আটক করে রাখার পর আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে প্রক্টরিয়াল টিমের মধ্যস্থতায় বাসটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আকতার হোসেন বলেন, এবিষয়ে গতকাল আমাদের ফাঁড়ির ইনচার্জ আমাকে জানান। আমি তাদের বলে দিয়েছি এর সাথে আমি এবং আমার সভাপতির কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল এর সাথে। তিনি জানান, আমরাও কয়েকদিন যাবত বাসটি গেটের সামনে দেখতে পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি ও ক্যাম্পাস ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদুল ইসলামের সাথে কথা বলেছি। তারা যেন বাসটিকে এখান থেকে দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়।
মন্তব্য করুন