ঢাকা , শনিবার, ২০২৪ নভেম্বর ২৩, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
#

আদালত

সেলিব্রেটিদের লোভনীয় বিজ্ঞাপন ই-অরেঞ্জের প্রতারণার ফাঁদ

টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০২২ সেপ্টেম্বর ২৭, ১২:৪৩ অপরাহ্ন
#

সেলিব্রেটিদের লোভনীয় বিজ্ঞাপনকে প্রতারণার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিনসহ অন্য কর্মকর্তারা অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের দিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করতেন। বিশাল ডিসকাউন্টে পণ্য বিক্রি ও দ্বিগুণ লাভে ভাউচার বিক্রির অফার দিয়ে সেই বিজ্ঞাপন প্রচার করা হতো। বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করতেন গ্রাহকরা। পণ্য না দিয়ে এসব গ্রাহকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন ই-অরেঞ্জের মালিকসহ অন্যরা। প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন হুমকি দিতেন।

প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়াসহ একাধিক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে গুলশান থানায় করা আট মামলার চার্জশিট ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আট মামলার চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে সোনিয়ার স্বামী মাসুকুর রহমান ও প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ চৌধুরীকে।

এদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আরও ২৩টি মামলা রয়েছে। এছাড়া পাঁচ মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষক; বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানাকে। সোহেল রানার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আরও ১৭টি মামলা রয়েছে। সোহেল রানা পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। মামলার চার্জশিটে এসব কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সেলিব্রেটিদের লোভনীয় বিজ্ঞাপন ই-অরেঞ্জের প্রতারণার ফাঁদ

এমন বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়েন ই-অরেঞ্জ গ্রাহকরা-সংগৃহীত ছবি

চার্জশিটে তদন্তকারী কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার উদ্দেশ্যে ই-অরেঞ্জ শপ নামক অনলাইন মার্কেটিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর তারা অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করে বিশাল ডিসকাউন্টে পণ্য বিক্রিয় ও দ্বিগুণ লাভে ভাউচার বিক্রির অফার দিতেন। এতে গ্রাহকরা বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন পণ্য অর্ডার করতেন। পণ্য না দিয়ে আসামিরা গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেন। টাকা চাইতে গেলে আসামিরা গ্রাহকদের হুমকি দিতেন। আসামিরা পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৬/৩৪ ধারায় অপরাধ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

পণ্য না দিয়ে তিন লাখ ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ মুকুল সরকারের

মুকুল সরকারের তিন লাখ ৩৫ হাজার ৬৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর বাদী হয়ে গুলশান থানায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক সিরাজ উদ্দিন ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ চৌধুরি, কাওছার আহম্মদ, বিথি আক্তার ও নাজমুল আল রাসেলের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬/৩৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন।

সেলিব্রেটিদের লোভনীয় বিজ্ঞাপন ই-অরেঞ্জের প্রতারণার ফাঁদ

প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের মানববন্ধন-ফাইল ছবি

দুই কোটি ৫৮ লাখ ২২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মাহফুজের মামলা: দুই কোটি ৫৮ লাখ ২২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ১৬ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান থানায় সোনিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া, তার স্বামী মাসুকুর রহমান, প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষক বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানা, প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আমান উল্লাহ চৌধুরী, জায়েদুল ফিরোজ, বিথি আক্তার ও নাজমুল আল রাসেলের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬/৩৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন।

সেলিব্রেটিদের লোভনীয় বিজ্ঞাপন ই-অরেঞ্জের প্রতারণার ফাঁদ

প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জের মুখে গ্রাহকরা-ফাইল ছবি

আপেলের ৪৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৯ টাকা আত্মসাৎ

৪৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী আপেল। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান আসামি সোনিয়া, শেখ সোহেল রানা, মাসুকুর রহমান, আমান উল্লাহ চৌধুরি, জায়েদুল ফিরোজ, আব্দুল কাদের, রুবেল খান, কাওসার আহম্মদ, কামরুল হাসান আকাশ, বিথি আক্তার ও নাজমুল আলম রাসেলকে অভিযুক্ত করে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬/৩৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন।

ইসতিয়াকের ৩৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৮ টাকা আত্মসাৎ

পণ্য না দিয়ে ৩৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সোনিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন গ্রাহক ইসতিয়াক। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক সিরাজ উদ্দিন আসামি সোনিয়া মেহজাবিন, মাসুকুর রহমান, আমান উল্লাহ চৌধুরি, কামরুল হাসান আকাশ, কাওসার আহম্মদ, শেখ সোহেল নারা, বিথি আক্তার, নাজমুল আলম রাসেল, নাজনীন নাহার বিথি, আব্দুল কাদের, রুবেল খান ও নূরজাহান ইসলামকে অভিযুক্ত করে পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০/৫০৬/৩৪ ধারায় চার্জশিট দাখিল করেন।

পণ্য না দিয়ে মেহেদীর ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ

পণ্য না দিয়ে ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৮৩ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০২১ সালের ১ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করেন মেহেদী আদনাল আহম্মদ নামে এক গ্রাহক। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক তুষার নন্দী ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন, শেখ সোহেল রানা, মাসুকুর রহমান, আমান উল্লাহ চৌধুরি, মোহাম্মদ জায়েদ ফিরোজ, বিথি আক্তার, কাওসার আহম্মেদ ও নাজমুল আলম রাসেলের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৬/৪২০/৩৪ ধারায় অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশিট দাখিল করেন।

 

সূত্র: জাগোনিউজ২৪

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video