নিজের গায়ের রং নিমেষেই বদলাতে পারে এমন একটি গাড়ি উদ্ভাবন করেছে বিএমডব্লিউ। লাসভেগাসের কনজিউমার ইলেকট্রনিকস শোতে দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে আই ভিশন ডি নামে অভিহিত গাড়িটি। বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, নিমেষেই নিজের ইচ্ছেমতো গায়ের রং পাল্টাচ্ছে বিএমডব্লিউর নতুন গাডিটি। শুধু নানা রকম রং-ই নয়, বিভিন্ন ডিজাইন ও প্যাটার্নেও পালটে যাচ্ছে গাড়িটির শরীর। গিরগিটির মতো নিমেষেই গায়ের রং পাল্টাতে সক্ষম এই গাড়িটি যুক্তরাষ্ট্রের লাসভেগাসে অনুষ্ঠিত কনজিউমার ইলেকট্রনিকস শোতে প্রদর্শন করছে জার্মান অটোমোবাইল জায়ান্ট বিএমডব্লিউ।
গাড়িটির রং বদলানোর পেছনে কাজ করছে ইলেকট্রনিক ইংক বা ই ইংক নামে একটি প্রযুক্তি। আগের বছরের সিইএসএ প্রথমবারের মতো রং পরিবর্তনে সক্ষম এমনই একটি গাড়ি এনেছিল বিএমডব্লিউ। তবে ওই গাড়ির থেকে বিএমডব্লিউ আই ভিশন ডি নামে অভিহিত এই গাড়িতে ব্যবহৃত ই-ইংক প্রযুক্তির ফারাকটা বিশাল।
আই ভিশন ডির শরীরে মোড়ানো আছে ২৪০টি আলাদা আলাদা কালার সেল। যার রং পরিবর্তন হয় সম্পূর্ণ আলাদাভাবে। এক নিমেষেই গাড়িটি সাদা থেকে কালো, কালো থেকে রঙিন অথবা রেসিং কারের মতো ডোরাকাটা স্ট্রাইপ যে কোনো প্যাটার্ন ধারণ করতে পারে। সব মিলিয়ে ৩২টি আলাদা আলাদা রঙে রূপ বদলাতে পারে গাড়িটি। নিজেকে সাজাতে পারে ৩২ রঙের সমন্বয়ে অসংখ্য ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশন ও ডিজাইনেও।
রং পরিবর্তনের সক্ষমতার পাশাপাশি এতে রয়েছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলেজেন্সসমৃদ্ধ ভারচুয়াল অ্যাসিসট্যান্স। স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষের কণ্ঠে চালকের সঙ্গে কথাবার্তাও বলতে পারে। দিতে পারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও। অনেকটা ৮০ এর দশকের জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজ নাইটরাইডারের গাড়িটির মতো। গাড়িটির নামের শেষে থাকা ডি দিয়ে বোঝানো হয়েছে ডিজিটাল ইমোশনাল এক্সপেরিয়েন্স।
আপাতত প্রোটো টাইপ হিসেবে গাড়িটিকে প্রদর্শন করছে বিএমডব্লিউ, তাই বাজারে আসছে না এখনই। তবে প্রদর্শনীতে আসা দর্শনার্থী ও প্রযুক্তিপ্রিয় মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যেই ঝড় তুলেছে গাড়িটি। বিশেষ করে রং পরিবর্তন করে গাড়িটির বহুরূপী সাজার এই সক্ষমতাই মুগ্ধ করছে দর্শনার্থীদের।
আরলিংটন ব্রিউবেকার নামে এক দর্শনার্থী বলেন, এই ধরনের গাড়ি টেলিভিশনেই দেখেছি। নিজের চোখে দেখার আগ পর্যন্ত আমি বিশ্বাসই করতে পারেনি এই ধরনের গাড়ি সত্যিই আছে। এটা এমন একটা জিনিস যা সম্পর্কে আমি আগে থেকে তেমন কিছুই জানতাম না। নিশ্চিতভাবেই আমি এই গাড়িটিকে চালাব।
সম্পূর্ণ নতুন কনসেপ্টের এই গাড়িটি তৈরিতে নানা প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হয়েছে বিএমডব্লিউকে। গাড়িটির নির্মাণে নেতৃত্ব দেন বিএমডব্লিউ'র ই-ইংক কর্মসূচির প্রজেক্ট লিডার স্টেলা ক্লার্ক।
স্টেলা ক্লার্ক বলেন, আমরা এই ডিজাইনটি করেছি কারণ আমাদের মনে হয় মানুষ এর সৌন্দর্য পছন্দ করবে। আমাদের প্রকৌশলীদের জন্য গাড়িটি তৈরি করা ছিল খুবই কঠিন একটি চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে গাড়িতে ই-ইংক প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল সম্পূর্ণ নতুন একটি বিষয়।
সব মিলিয়ে বিএমডব্লিউর ঐতিহ্যবাহী রাজকীয় ও সম্ভ্রান্ত অনুভূতির সঙ্গে বৈদ্যুতিক গাড়ি টেসলার ফিউচারিস্টিক আমেজও উপহার দেবে আই ভিশন ডি।
মন্তব্য করুন