কাঁদলে অতিরিক্ত এটিসিএইচ হরমোন বের হয়ে যায় এবং কর্টিসোলের পরিমাণ কমে যায়। ফলে মনে থাকা চাপ কমে।
হাসি-কান্না সবই আমাদের অনুভূতির প্রকাশ। আনন্দে আমরা হাসি। দুঃখ পেলে কাঁদি। অনেক ক্ষেত্রে আনন্দেও মানুষ কেঁদে ফেলেন। এই কান্নাই আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে নানা রকম প্রভাব ফেলে। কান্নার আছে বেশ কিছু উপকারিতাও। মেডিক্যাল নিউজ টুডের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত। চলুন দেখে নেই।
১. কাঁদলে চোখ পরিষ্কার হয়
কাঁদলে আমাদের চোখ থেকে জল বের হয়। এটা এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক। এই জল চোখের মণি আর চোখের পাতা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে দেয়। এটি আমাদের চোখকে শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকেও বাঁচায়। ফলে কান্না আমাদের চোখ পরিষ্কার রাখতে আর দৃষ্টি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
২. জীবাণুদের সাফাই করে
চোখের জলে আছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। এগুলো চোখে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করে। রাস্তা-ঘাটে, বাসে-ট্রেনে ধুলো-বালি থেকে সারা দিনে চোখের ভেতর কত ময়লাই না জমা হয়। এগুলো থেকে নানা জীবাণু আমাদের চোখের ভেতরে বাসা বাঁধতে পারে। কিন্তু চোখের জল সেসব জীবাণু ধ্বংস করতে খুবই কার্যকর। চোখের জলে থাকা আইসোজাইম মাত্র ৫-১০ মিনিটে চোখে বাসা বাঁধা ৯০-৯৫ শতাংশ ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে।
৩. কান্না মন ভালো করে দেয়
মনের মধ্যে চেপে রাখা কষ্ট যদি কান্নার মাধ্যমে বেরিয়ে আসে, তাহলে মন হালকা হয়। তাই মনোবিদরা বলেন মন খারাপ হলে, কান্না পেলে নিজেকে না আটকাতে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সহজেই চোখের জল ফেলতে পারে, তারা অবসাদের সঙ্গে খুব ভালো মোকাবিলা করতে পারেন।
৪. মাথার যন্ত্রণা কমাতে কার্যকর
কাঁদলে অতিরিক্ত এটিসিএইচ হরমোন বের হয়ে যায় এবং কর্টিসোলের পরিমাণ কমে যায়। ফলে মনে থাকা চাপ কমে। আমাদের শরীরে থাকা চাপ নিবারক আরেকটি উপাদান হচ্ছে লিউসিন এনকেফালিন। কান্নার ফলে এটি নিঃসৃত হয়। এটি ব্যথা কমায় এবং মন ভালো করে দেয়।
৫. কাঁদলে ঘুম ভালো হয়
২০১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কাঁদার সময় আমাদের শরীরের ভেতরে এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার প্রভাবে দ্রুত প্রশান্তির ঘুম আসে। তাই দেখা যায়, অনেকে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েন।