হাটহাজারীতে অংশীদারদের অবগত না করে চলাচল পথের ফলন্ত গাছ কর্তন ও রাস্তার নির্মাণের নামে পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডস্থ হেদায়েত আলি পাড়ার হাঁচি মিয়ার বাড়িতে ওই বাড়ির মৃত মো. ইউনুস সদ্য প্রবাস ফেরত মো. এনাম, মৃত শমসু মিয়ার পুত্র মো. জসিম ও মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ এক নারীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই এলাকার পুকুরের অংশীদার মৃত নুরুল আলমের পুত্র মো. সেলিম উদ্দিন, মৃত শাহ আলমের পুত্র মো. শহিদুল আলম, মৃত জামাল খাঁ মিয়ার পুত্র মো. শফিউল আলম, মৃত জহুর আলমের পুত্র মো. ফাহিম, মৃত আব্দুল মালেক ও মৃত এয়ার মোহাম্মদের পরিবার মঙ্গলবার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়ন পরিষদের এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও অংশীদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সদ্য প্রবাস ফেরত অভিযুক্তরা হঠাৎ তাদের ঘরে প্রবেশের নামে চলাচলের রাস্তা বাদ দিয়ে কাউকে অবগত না করে চলাচলের পথের বেশ কয়েকটি ফলন্ত গাছ কর্তন করে। চলাচলের রাস্তা বর্তমান থাকা সত্ত্বেও পুকুরের পানি সেচ দিয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণের নামে শুক্রবার থেকে মাটি কাটার শ্রমিক দিয়ে পুকুরের এক পাশ ভরাট করতে থাকে। এতে অংশীদাররা খবর পেয়ে বাধা দিতে গিলে তাতে কর্ণপাত না করে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকী দিতে থাকে। তারা নিজেরা উপস্থিত থেকে পুকুরের পাড় ভরাটে ব্যস্ত থাকে। অভিযোগকারীরা জানান, তারা সন্ত্রাসের ভয় দেখিয়ে কাজ চলমান রেখেছে। সমাজের সর্দার কাজ বন্ধ রাখতে বললেও তারা মানেনি। গায়ের জোরে তারা কাজ করে যাচ্ছে। তারা বলেন, আমি শান্তির পক্ষে বিশৃংখলা, মারামারির পক্ষে নই। তাদের রাস্তা নির্মাণ, পুকুরের পানি সেচের প্রয়োজন হলে আমাদের জানাতে পারত কিন্তু তারা তা না করে গায়ের জোরে ফলন্ত গাছ কর্তন করেছে। পুকুরের পানি সেচ দিয়ে পুকুরের এক পাশ ভরাট করছে। তারা আরো বলেন, তাদের চল্লিশ শতকেরও বেশি জায়গাও অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে খাচ্ছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. এনাম জোরপূর্বক গাছ কর্তন ও রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে বলেন, রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে আলাপ আলোচনার পর সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুকুর সেচ দিয়ে মাছও সবাইকে অংশ হিসেবে বন্টন করে দেয়া হয়েছে। গাছ কর্তন নিয়ে আমার চাচাত ভাই জসিমের সাথে শহিদুল আলমের একটু সমস্যা হয়েছিল। সমাজের সর্দার আর ইউপি সদস্যের উপস্থিতি একটা সমাধান হয়েছে। হঠাৎ জোরপূর্বক উল্লেখ করে পরিষদে অভিযোগ কেন বুঝতে পারছিনা। এসময় তিনি আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে জানান।
জানতে চাইলে সমাজের সর্দার সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান বলেন, সোমবার ইউপি সদস্যসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কর্তন ও পুকুরের পানি সেচের বিষয়ে তাদের বকাঝকা দিয়ে একটা মিমাংসা করে দেয়া হয়েছিল। অংশীদার এবং জায়গার অন্যান্য মালিকদের সাথে বসে একটা সমাধানের আগ পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু শুনলাম তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এসময় প্রতিবেদককে তিনি ইউপি সদস্যকে ফোন দেয়ার অনুরোধ জানান।
ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, গাছ কর্তনের বিষয়ে অভিযুক্তরা ভুল স্বীকার করেছে। উভয় পক্ষে সোমবার একটা মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ জানায়নি। যেহেতু আজ (মঙ্গলবার) পরিষদে অভিযোগ করেছে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবস্থা নিব।
প্যানেল চেয়ারম্যান ফাতেমা বেগমের কাছে জানতে চাইলে ঘটনা শুনেছেন উল্লেখ করে বলেন, আমি তিন মাস দায়িত্বে ছিলাম এখন নাই। চেয়ারম্যান হারুন ভাই দায়িত্বে আছেন।
এদিকে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন উর রশিদের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বার বার সংযোগ কেটে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) কে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবগত করে ব্যবস্থা নিতে বলছি এক্ষুনি।