চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে চলছে দেদারসে মাটি কাটা এবং অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব। ফসলি জমির টপসয়েল কাটার পাশাপাশি পাহাড়ি ছড়া থেকে বালু উত্তোলন অবাধে চলছে। বাঁশখালী পৌরসভার জলদীসহ উপজেলার পুঁইছড়ি, পূর্ব চাম্বল, শীলকূপ, বৈলছড়ি, কালীপুর, সাধনপুর ও পুকুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে পাহাড় কাটা, মাটি কাটা এবং অবৈধ বালু উত্তোলনের কার্যক্রম চলছে। প্রশাসনের অভিযানেও থামছে না এই পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে উত্তর জলদী ৪নং ওয়ার্ড ছুম্মাপাড়া সংলগ্ন সুপারিকাটা এলাকায় পাহাড়ি ছড়ায় স্ক্যাভেটর দিয়ে দিনে-রাতে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের ফলে আশপাশের বাড়িঘর ও সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ পুঁইছড়ি এলাকার প্রেমবাজারের দক্ষিণে প্রধান সড়কের উভয় পাশে ৩-৪টি স্ক্যাভেটর এবং ২০-২৫টি ডাম্পার ট্রাক দিয়ে রাতের আঁধারে ফসলি জমির টপসয়েল কাটার মহোৎসব চলছে। প্রশাসনের অভিযান এড়াতে বিভিন্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেল আরোহী অন্তত ২৫-৩০ জন যুবক পাহারা দেয়। প্রশাসন অভিযানে বের হলে এসব যুবক ট্রাক চালকদের সতর্ক করে দেয় বলে জানা গেছে।
সোমবার রাতে সরেজমিনে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পুঁইছড়িতে মাটি কাটার কাজে নিয়োজিত স্ক্যাভেটর এবং ট্রাকের নিরাপত্তায় থাকা যুবকরা আত্মগোপনে চলে যায়। তবে স্থানীয়দের মতে, আওয়ামী লীগ নেতা সুলতানুল গণী চৌধুরী লেদুর নেতৃত্বে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। কালীপুর ইউনিয়নের ছলিয়ার বাপের পুল এলাকার সড়কের পাশের ছড়া থেকে নিয়মিত বালু উত্তোলন চলছে। সাবেক চেয়ারম্যানের অনুগত কামরুল ইসলাম এবং রফিক আহমদের নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কোদালি খালের শেষ প্রান্তে পাগলা মোড় এলাকায় পাহাড়ি ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যুবলীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এসব কার্যক্রম পরিচালনা করত। সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপির কিছু নেতার যোগসাজশে মাটি কাটার রমরমা ব্যবসা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম উদ্দিন বলেন, "অবৈধভাবে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে মাটি কাটা এবং বালু উত্তোলনের অপরাধে স্ক্যাভেটর ও ট্রাক মালিকদের জরিমানা এবং চালকদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পুঁইছড়ি এলাকায় রাতের আঁধারে যারা মাটি কাটছে, তাদের বিরুদ্ধেও শিগগির অভিযান পরিচালনা করা হবে।"