কোনো ধরনের আদেশ না দেয়ার পরও হাইকোর্ট থেকে আদেশ দেয়া হয়েছে মর্মে চট্টগ্রামের একটি স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের আইনজীবী মোহাম্মদ খুরশীদ আলম খান।
তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের বদলি সংক্রান্ত কোনো আদেশ স্থগিত করেননি হাইকোর্ট। এরপরও ‘দুদকের সেই কর্মকর্তার বদলির আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট’ শিরোনামে চট্টগ্রামের দৈনিক পূর্বকোণসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকা খবর প্রকাশ করে। বিষয়টি নজরে আসায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
একই সঙ্গে এ বিষয়ে পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় রিজয়েন্ডার (প্রতিবাদলিপি) ছাপানোর জন্য বলা হয়েছে। প্রতিবাদ প্রকাশের পর সেই পত্রিকার কপি হাইকোর্টে দাখিল করার জন্য দুদকের আইনজীবীকে নির্দেশনাও দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, চট্টগ্রামের দৈনিক পূর্বকোণ লিখেছে ‘দুদক কর্মকর্তার বদলির আদেশ হাইকোর্ট স্থগিত করেছেন’। আসলে হাইকোর্ট স্থগিত করেননি। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া খবর। বরং হাইকোর্ট তার আবেদনটি কার্যতালিকা (কজ লিস্ট) থেকে বাদ দিয়েছেন।
দুদক আইনজীবী বলেন, আসল ফ্যাক্ট হলো- দৈনিক পূর্বকোণসহ চট্টগ্রামের কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকা হাইকোর্টের আদেশটা টুইস্ট করেছে। এখন আমি অফিসিয়ালি এর ব্যবস্থা নিচ্ছি।
‘সেই দুদক কর্মকর্তার বদিল আদেশ স্থগিত’ শিরোনামে গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রামের দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি সোমবার (২ আগস্ট) আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। তখন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, না, আমরা এমন কোনো আদেশ দেইনি। এ সময় আইনজীবী ওই পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি আদালতকে দেখান। তখন আদালত দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খানকে ডেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাজহরুল হক স্বাক্ষরিত হাইকোর্টের একটি আদেশের অনুলিপির বরাত দিয়ে দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়, হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, দুই সপ্তাহের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন সপদে বহাল রাখার আদেশ দেন।
কিন্তু লিখিত অনুলিপিতে দেখা যায়, আইনজীবী তার সার্টিফাইড কপিতে দুই সপ্তাহের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) লিখেছেন। কোথাও স্টে (স্থগিত) লেখা হয়নি।
এ কর্মকর্তাকে সম্প্রতি পটুয়াখালীতে বদলি করে দুদক। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। হাইকোর্ট এ বিষয়ে কোনো আদেশ না দিয়ে আবেদনটি কার্যতালিকা (কজ লিস্ট) থেকে বাদ দেন।