চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: কথা কাটাকাটি থেকে মারধরের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক তিনটি উপ-গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলওয়ে স্টেশনের পাশে মারামারির সূত্রপাত হয়।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিএফসির অনুসারী ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মো. শাকিলকে মারধর করে সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা। এসময় মারধরের খবর পেয়ে তার বন্ধু আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মমিনুর রহমান আসিফ ঘটনাস্থলে গেলে সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা আসিফকেও মারধর করেন।
এ ঘটনার জেরে রাত ১২টার দিকে বিজয় ও সিএফসির অনুসারীরা একসঙ্গে সিক্সটি নাইন গ্রুপের মুখোমুখি হয়। পরে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ সংঘর্ষ।
এসময় বিজয়ের অনুসারীরা সোহরাওয়ার্দী হল মোড়ে অবস্থান নেন। এছাড়া সিএফসির অনুসারীরা আমানত হলের সামনে এবং সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। সংঘর্ষ চলাকালে বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীরা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। ঘটনাস্থলে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এছাড়া দেশিয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা যায় দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের। ফলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ঘটনাস্থল। এ ঘটনায় আহত দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবীর পলাশ বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম। পুলিশের সহযোগিতায় দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীদের হলে ঢুকিয়ে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর আমরা এসেছি।
এদিকে একই ঘটনার জেরে ভোর রাত ৪টার দিকে আরও একবার সংঘর্ষে জড়ায় বগিভিত্তিক এই তিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা। ঘণ্টাখানেক চলে এ সংঘর্ষ। এতে তিন গ্রুপের অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষে জড়িত গ্রুপগুলো হলো- বিজয় ও সিএফসি এবং সিক্সটি নাইন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বাংলানিউজকে বলেন, বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীদের সঙ্গে থাকা এক ছাত্রীকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করলে ঘটনার সূত্রপাত হয়।
বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, সিক্সটি নাইন আর সিএফসি গ্রুপের ঝামেলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে সিক্সটি নাইন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সিএফসি গ্রুপের আরেক নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদাফ খান বলেন, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা আমাদের কর্মী শাকিলকে মারধর করে। এসময় তাকে মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে গেলে বিজয় গ্রুপের আসিফকেও মারধর করে তারা।
সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, সভাপতির সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। তিনিও সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করেছেন। ক্যাম্পাসে প্রথম বর্ষের ছেলেরা ঝামেলা বাঁধিয়েছে। এখন কী কারণে ঘটেছে, কেন ঘটেছে তা জানতে সময় লাগবে।