ঢাকা , শনিবার, ২০২৪ নভেম্বর ২৩, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
#

লাইফস্টাইল

দৈনিক সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো মানে সাধারণ ঘুমের মাত্রা। পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা মানে কম বা মাঝারি ঘুমানো। আর তিন-চার ঘণ্টা মানে অতি কম ঘুমানো।

অল্প ঘুমানো থেকে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি

লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২০২৪ মার্চ ০৭, ০৭:২৫ অপরাহ্ন
#

রাতে কম ঘুমানোর কারণে পরদিন শুধু ক্লান্তই লাগে না, স্বাস্থ্যের জন্য ও অনেক ক্ষতি ।

আর জামা নেটওয়ার্ক ওপেন সাময়িকীতে প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফলে দাবি করা হয়, কম ঘুমানোর কারণে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

সাত-আট ঘণ্টা ঘুমায় এমন মানুষদের সাথে যারা কম ঘুমায় তাদের তুলনা করে এই গবেষণা চালায় সুইডেনের উপসালা ইউনিভার্সিটিফার্মাসিউটিকল বায়োসায়েন্স বিভাগ।

এই বিভাগের গবেষক ও গবেষণার প্রধান ডা. ডায়ান নোগা সিএনএন ডটকমকে এক বিবৃতিতে বলেন, আগের গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে প্রতিদিন বিশ্রামের অভাবে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকলেও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ফল খাওয়ার অভ্যাসে এই ঝুঁকি কমে।

তিনি আরও বলেন, তবে যারা অতি মাত্রায় কম ঘুমায় তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি খাদ্যাভ্যাস কমাতে পারে কি-না, সে ব্যাপারে পরিষ্কার কোনো ধারণা ছিল না।

এই গবেষক দাবি করেন যে, এবার সেই উত্তর পাওয়া গেছে।

ইউকে বায়োব্যাংক স্টাডিতে অংশ নেওয়া প্রায় ২ লাখ ৪৭ হাজার ৯শ জনের তথ্য নিয়ে পর্যবেক্ষণমূলক এই গবেষণা শুরু করা হয়। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৬৯ বয়সি প্রায় ৫ লক্ষ অংশগ্রহণকরীর তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয় ১০ বছর ধরে।

অংশগ্রহণকারীরা তাদের খাদ্যাভ্যাস ও ২৪ ঘণ্টায় কী পরিমাণ ঘুমান, সে বিষয়ে তথ্য দেন।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস হিসেবে বোঝানো হয়- প্রতিদিন দুই বা ততধিক ফলের টুকরা খাওয়া, সপ্তাহে দুই বা বেশিবার মাছ খাওয়া বা প্রতিদিন ৪ বা এর বেশি টেবিল-চামচ পরিমাণ সবজি খাওয়া।

আরও ধরা হয়- সপ্তাহে দুবারের বেশি প্রক্রিয়াজাত খাবার বা লাল মাংস না খাওয়া।

ঘুমের ক্ষেত্রে মান ধরা হয়- দৈনিক সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো মানে সাধারণ ঘুমের মাত্রা। পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা মানে কম বা মাঝারি ঘুমানো। আর তিন-চার ঘণ্টা মানে অতি কম ঘুমানো।

সাড়ে ১২ বছরের গবেষণা শেষে দেখা গেছে, ৭ হাজার ৯শ’ ৫ জন টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন।

যারা স্বাভাবিক মাত্রায় ঘুমিয়েছেন তাদের তুলনায় ছয় ঘণ্টা কম ঘুমানোদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দেখা গেছে ‍দ্বিগুন। এমনকি এদের মধ্যে যারা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত ছিলেন, তাদেরও ঝুঁকি কমেনি।

 গবেষণার সাথে সম্পৃক্ত না থেকেও ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি মিলকেন ইন্সটিটিউট স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ’য়ের ‘হেল্থ পলিসি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট’য়ের অধ্যাপক ডা. লিয়ানা ওয়েন এই বিষয়ে বলেন, “বংশগতি ছাড়াও জীবনযাপনের প্রভাবও যে এই ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগ তৈরি করতে পারে সে ব্যাপারে প্রমাণ দেয় গবেষণার ফলাফল।

তিনি আরও বলেন, “জীবনযাপনের প্রভাব বলতে অনেকেই বোঝেন খাদ্যাভ্যাস আর ব্যায়াম। তবে দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে ঘুমও গুরুত্বপূর্ণ।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকির সাথে ঘুমের সম্পর্ক

“শুধু কারণ আর প্রভাব নয়- এই গবেষণা প্রমাণ করে যে, কম ঘুমের কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে”- সিএনএন ডটকম’য়ের প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন স্কটল্যান্ডের ‘ইউনিভার্সিটি অফ গ্লাসগো’র ‘স্কুল অফ কার্ডিওভাস্কুলার অ্যান্ড মেটাবোলিক হেল্থ’য়ের কার্ডিওমেটাবলিক মেডিসিন’য়ের অধ্যাপক ডা. নাভিদ সাত্তার।

ডা. ওয়েন বলেন, “গ্লুকোজের বিপাকীয় কার্যক্রমের সঙ্গে ঘুমের সম্পৃক্ততা রয়েছে। যা কি-না ডায়াবেটিস হওয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত।

এই দুই চিকিৎসক পরামর্শ দেন, যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়া হয়ত সম্ভব হয় না সব সময়্। তবে রাতে অন্তত পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস গড়াই যায়।

শীতল, অন্ধকার ও নীরব পরিবেশ ঘুম আসার জন্য উপকারী। অন্যদিকে মোবাইল ফোনে সোশাল মিডিয়া ঘাটাঘাটি করার চাইতে বই পড়লেও ঘুম আসবে তাড়াতাড়ি। অনেকের গোসল করাতেও ঘুম ভালো আসে।

এছাড়া যে কোনো ধরনের ক্যাফিন গ্রহণ বন্ধ করতে হবে ঘুমের অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে। আর মদ্যপান ঘুম আনলেও সারারাত গভীর ঘুমের ব্যঘাত ঘটায়। ফলে পরদিন বেসামাল কাটে। তাই অ্যালকোহল পরিহার করতে হবে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video