মুহাম্মদ ইউনূসকে ঘিরে বিএনপির ক্ষোভের প্রকাশ, তীব্র হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দূরত্ব

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি বিএনপির অসন্তোষ ক্রমেই প্রকাশ্য হয়ে উঠছে। নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়া, জাপান সফরে বিএনপিকে ঘিরে মন্তব্য এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিরবতা—এসব কারণে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে প্রতিনিয়ত উঠে আসছে হতাশা ও ক্ষোভের সুর।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির এই অবস্থান অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ তৈরির কৌশল। তবে এমন উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক রাজনৈতিকভাবে কতটা যৌক্তিক, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, "সরকারের ওপর চাপ তৈরি করার এই প্রয়াসই বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে প্রতিফলিত হচ্ছে। এটি রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেই দেখা যেতে পারে।"

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “নেতৃত্বের কেউ যেভাবেই বলুন না কেন, রাজনৈতিক শিষ্টাচার অবশ্যই রক্ষা করা উচিত। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মান করি এবং সে সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতেই তাঁর প্রতি নানা তাগাদা দিয়ে যাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই না প্রধান উপদেষ্টার সম্মান ক্ষুণ্ন হয় বা এমন কোনও দৃশ্যমান পক্ষপাতিত্ব দেখা দেয়, যাতে নিরপেক্ষ সরকারের ভাবমূর্তি কলঙ্কিত হয়।”

এদিকে, কেউ কেউ আওয়ামী লীগ সরকারের আচরণের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের তুলনাও টানছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাব্বির আহমদের মতে, “প্রধান উপদেষ্টা যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব না দেন এবং নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ না দেন, তবে তাঁকে নিয়ে সমালোচনা বাড়তেই থাকবে।”

তিনি বলেন, “ড. ইউনূস সম্ভবত সংলাপকে গুরুত্ব দেন, কিন্তু তাঁর কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অবহেলার চিত্রই দেখা যাচ্ছে। তাঁর অর্জন যেমন ছিল, তেমনি দ্রুত কিছু হারিয়েও ফেলেছেন।”

উল্লেখযোগ্যভাবে, ৫ আগস্টের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিএনপি শুরুতে সমর্থন দিলেও সময়ের ব্যবধানে সেই সমর্থনে ভাটা পড়েছে—এটি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট।