২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য ৭ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিজিবি দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এই তথ্যটি তুলে ধরেন।
উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল রোববার কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছেন। এর আগে হাইকোর্ট কমিশন গঠনের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিল। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ নানা মহল দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছিল।
এ প্রসঙ্গে, ১৫ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাইকোর্টকে জানায় যে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে আপাতত কোনো কমিশন গঠন করা হচ্ছে না। এর পরদিন, ১৭ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মন্ত্রণালয়কে অভিযোগ করে, তারা দাবি করে যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তদন্ত কমিশন গঠন করতে গড়িমসি করছে। আন্দোলনকারীরা পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয়। এর পরই ১৮ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে। তবে, আজ (২৩ ডিসেম্বর) তিনি নিশ্চিত করেন যে, এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ২০০৯ সালে ঘটে, যখন রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন হত্যার শিকার হন। পরে, এই ঘটনায় লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়, যা পরবর্তীতে নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডি প্রথমে ৮২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে, যার মধ্যে ২৩ জন বেসামরিক ব্যক্তি ছিলেন। পরে, বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮০৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়, এবং আরও ২৬ জন আসামি যুক্ত হয়ে ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের মামলা চলাকালীন ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে, ২৭৭ জন আসামি খালাস পান। এ মামলার বিচার চলার সময়ে বিডিআরের ডিএডি রহিমসহ চার আসামির মৃত্যু হয়েছে।