ঢাকা , মঙ্গলবার, ২০২৫ এপ্রিল ২২, ৯ বৈশাখ ১৪৩২
#

জাতীয়

ধর্ষণের সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড: অধ্যাদেশ জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০২০ অক্টোবর ১৩, ০৬:২৯ অপরাহ্ন
#
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনীর যে খসড়া মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে, তা রাষ্ট্রপতির সইয়ের পর অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছে। সংসদ অধিবেশন না থাকায় এটি অধ্যাদেশের মাধ্যমেই আইনে পরিণত হলো, এখন নিয়ম অনুযায়ী সংসদ অধিবেশন শুরু হলে আইন আকারে পাস হবে। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে ‘সংশোধিত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০’ জারি করা হয়। দেশে সাম্প্রতিক কয়েকটি ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১২ অক্টোবর) মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিদ্যমান আইনের একটি ধারা সংশোধন করে ধর্ষণে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়। বর্তমানে সংসদ অধিবেশন না থাকায় এ নিয়ে মঙ্গলবারই একটি অধ্যাদেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ২০০০ সালের ৮নং আইনের ধারা ৯ এর সংশোধনে জারি করা অধ্যাদেশে বলা হয়, ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে। আগের আইনে ‘অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিক্যাল পরীক্ষার’ কথা বলা ছিল। অধ্যাদেশে ‘অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিক্যাল পরীক্ষা’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে। এছাড়াও ‘অপরাধের শিকার ব্যক্তির’ কথা বলা ছিল। অধ্যাদেশে ‘অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করিয়া’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হবে। অধ্যাদেশে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড) পরীক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং অপরাধের শিকার ব্যক্তির ধারা-৩২ এর অধীন মেডিক্যাল পরীক্ষা ছাড়াও উক্ত ব্যক্তির সম্মতি থাকুক বা না থাকুক, ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইন, ২০১৪ (২০১৪ সালের ১০ নং আইন) এর বিধান অনুযায়ী ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে। আগের দিন মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত কিছুদিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধগুলো কঠোরভাবে দমনের জন্য প্রস্তাব আনা হয়। আইনের ধারা ৯(১)-এ যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রতিস্থাপিত হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। মন্ত্রিসভায় এ বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে সবাই এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন এবং পরবর্তীকালে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে প্রস্তাবটা গ্রহণযোগ্য এবং অবিলম্বে আনা প্রয়োজন। যেহেতু সংসদ কার্যকর নাই, সেজন্য এটা অধ্যাদেশের মাধ্যমে জারি করা হবে। লেজিসলেটিভ বিভাগের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইনের ১১(গ) এবং ২০(৭) ধারা সংশোধন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ধর্ষণ ছাড়া সাধারণ জখম হলে কম্পাউন্ড (আপসযোগ্য) করা যাবে। আর চিলড্রেন অ্যাক্ট, ১৯৭৪ প্রযোজ্য হবে না। এখন শিশু আইন, ২০১৩ প্রযোজ্য হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৮০ দিনের মধ্যে মামলার বিচার শেষ করতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচার হবে। যদি কোনো বিচারক চলে যান তাহলে তিনি যে অবস্থায় রেখে গেছেন সেই অবস্থা থেকে পরবর্তীতে বিচার হবে। এক প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটার একটা পজেটিভ ইমপ্যাক্ট আসবে। যারা অপরাধ করবে তারা অন্তত চিন্তা করবে যে এটা তে মৃত্যুদণ্ড আছে, এখন তো আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড না। সে কিন্তু একটু হলেও বিরত থাকবে, চিন্তা থাকবে যে মৃত্যুদণ্ড হবে। সমাজে এটার একটা পজিটিভ ইমপ্যাক্ট হবে।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video