বাবার সেই ইফতারের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন তার সন্তানরা


প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০২৪ মার্চ ২৬, ০৪:২২ অপরাহ্ন

সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী চলে গেছেন  সাত বছর।  কিন্তু রয়েছে তাঁর গরীব-মেহনতি মানুষের প্রতি ভালোবাসার চর্চা।

প্রতিবছর রমজান মাস এলেই হাজারো মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ইফতারের আয়োজন করতেন তিনি। সেখানে শামিল হতেন ধনী-গরীব সবাই মাঝে।

এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দূরদূরান্ত থেকে নারী পুরুষ, ছোট বড় সবাই এ ইফতার আয়োজনে ছুটে আসেন। ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এক কাতরে ইফতার করেন সবাই। এ সম্প্রীতি স্মরণ করিয়ে দেয় অসহায়দের প্রতি মহিউদ্দিন চৌধুরীর ভালোবাসার কথা।

অসহায়দের সঙ্গে নিয়ে ইফতার করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। তিনি আজ বেঁচে নেই। কিন্তু তাঁর এ মহান কর্মযজ্ঞ চালিয়ে নিচ্ছেন তার ছোট ছেলে এবং এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নগরের জিইসি মোড়ের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মসজিদ সংলগ্ন মাঠে, সেখানে সারিবদ্ধভাবে বসে মাগরিবের আজানের অপেক্ষা করছেন হাজারো মানুষ।  

আছরের নামাজের পর থেকে ইফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত হাফেজদের সুললিত কণ্ঠে হয় পবিত্র কুরআন তেলওয়াত।  

সোমবার (২৫ মার্চ) আছরের নামাজের পর থেকে মসজিদের মিম্বরে আল্লাহর কাছে রোজাদারের মর্যাদা সম্পর্কে বয়ান দিচ্ছিলেন অধ্যক্ষ ত্বোহা মোহাম্মদ মুদ্দাসিসর। এ চিত্র যেন নিত্যদিনের। প্রতিদিন ইসলামের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।  

সেখানেই কথা হয় ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক রহমতুল্লাহর সঙ্গে। রিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তার সিংহভাগ পাঠিয়ে দেন বাড়িতে। তাই সকাল থেকে নগরের বিভিন্ন স্থানে রিকশা চালিয়ে জিইসিতেই চলে আসেন তিনি। একপাশে রিকশা রেখে আসরের নামাজ পড়ে ইফতারের জন্য প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদেই বসে হুজুরের বয়ান শুনেন। ইফতার শেষে রিকশা নিয়ে আবারও বেড়িয়ে পড়েন যাত্রীর খোঁজে।  

শুধু খেটে খাওয়া দিনমজুর রিকশাচালকারাই নয়, জিইসি মোড়ের ফল ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুটপাতের কাপড় ব্যবসায়ীরাও সাময়িক সময়ের জন্য দোকান বন্ধ করে সামিল হন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের আয়োজিত ইফতারে।

কথা হয় এমন বেশ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা বলেন, সারাদিন কাজ শেষ করে মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের ইফতারে চলে আসি। ভিন্ন আমেজ থাকে এখানে। ধনী গরিবের কোন ভেদাভেদ নেই। সবাই একই কাতারে বসে ইফতার করি। এছাড়াও ইসলাম, রোজা, নামাজ সম্পর্কে অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারি।

শুধু তাই নয়, যখন চট্টগ্রামে থাকেন এ ইফতারে সামিল হন মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও।  

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মাদ মঈনুদ্দিন বলেন, আমি এবং আমার সহকারী ইমাম ছাড়াও প্রতিদিন একজন বড় আলেম আছর নামাজের পর থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দিক দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। এ সময় দেশ ও জাতির কল্যাণে দোয়া পরিচালনা করা হয়।  

প্রতিদিন প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষের আয়োজন হয় এখানে। চট্টগ্রামের নামকরা বাবুর্চি মোহাম্মদ বাদশার রান্না করা ইফতারের নানা পদ এখানে পরিবেশন করা হয়।  

এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বোরহানুল হাসান চৌধুরী সালেহীন বলেন, আমার আব্বা মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সবসময় সবাইকে নিয়ে ইফতার করাতেন। তিনি থাকাকালীন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর হাজারো মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ইফতার করতেন। তার অবর্তমানে আমরা এ কর্মযজ্ঞ চালিয়ে নিচ্ছি। এখানে প্রতিদিন আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার মানুষ ইফতার করেন। ইফতারের আগে প্রতিদিন একেকজন আলেম ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

 

 


সম্পাদক ও প্রকাশক : মো: শামসুল কবির শাহীন
ব্যবস্থাপনা পরিচালক: মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির
নির্বাহী সম্পাদক:এম.এ কাইয়ুম

■ অফিস  :
প্রধান কার্যালয় : ২৪, গার্ডেন ভিউ, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লুফ রোড (লিংক রোড), ৬নং ব্রীজ, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম।
সম্পাদকীয় কার্যালয় : এম.এম টাওয়ার (৮ম তলা, লিফট-৭), সানমারের উত্তর পাশে, জিইসি মোড়, চট্টগ্রাম

মোবাইল : +880 1844 29 28 58
ই-মেইল : newsoffice.24tv@gmail.com

কপিরাইট © 2018-2023 24tv.com.bd । একটি টুয়েন্টিফোর ফ্যামেলির প্রতিষ্ঠান
Design & Developed by Smart Framework