বাঁশখালীতে চাঁদা না পেয়ে বসতভিটা দখল চেষ্টা ও ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে বাঁশখালী কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী দুলাল সুত্রধর।
উপজেলার কালীপুর ইউপির ৬ নং ওয়ার্ড জঙ্গল কোকদন্ডীর ঋষিধাম পাড়া এলাকায় এঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে মৃত হরিপদ সুত্রধরের ছেলে ভুক্তভোগী দুলাল সুত্রধর বাদী হয়ে একই এলাকার ননী গোপাল সুত্রধর এর পুত্র অভিযুক্ত সুকুমার সুত্রধরের বিরুদ্ধে বাঁশখালী সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছে।
মামলার অভিযোগ ও বাদী সুত্রে জানা যায়, ঋষিধাম পাড়া মৃত হরিপদ সুত্রধরের অপর পুত্র সুনিল সুত্রধরের কাছ থেকে একই এলাকার মৃত সুরেন্দ্র সুত্রধরের পুত্র ননী গোপাল সুত্রধর বিগত ২০০৯ সালের মার্চ মাসের ১৭ তারিখে রেজিস্ট্রীকৃত ১০৭৪ নং কবলা মুলে বিএস জরিপের ৯০৬ খতিয়ানের বিএস ২৯১৫, ২৯০৫, ২৯০৮, ২৯০৯, ২৯১১, ২৯১২, ২৯১৬ এবং ২৯২৬ সহ মোট ৮টি দাগ থেকে দেড় গন্ডা বা ৩ শতক জায়গা খরিদ করে, উক্ত মতে দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত বিএস ২৯০৮ নং দাগে ভোগ দখলে থাকা সত্বেও এরইমধ্যে মৃত হরিপদ সুত্রধরের পুত্র দুলাল সুত্রধরের বিএস ২৯১২ দাগের বসতভিটাটি সুকুমার সুত্রধরের জায়গা বলে দাবি করে দুলাল সুত্রধরের পরিবারের উপর জুলুম নির্যাতন শুরু করে এবং বসতভিটাটি দখল করার চেষ্টা করছে এবং দুলাল সুত্রধরের নির্মাণধীন পাকা ঘুরের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে সুকুমার।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে ভুক্তভোগী দুলালের উপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরে স্থানীয় সপন রুদ্র, বিশ্বজিৎ, সৃজন ধর, কৃষ্ণ ধর,আশিসসহ অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ বলেন, দুলাল সুত্রধর বাপ-দাদার আমলে থেকে এই বসতভিটায় বসবাস করে আসছে, তার ভাই সুনিল সুত্রধর যে দেড় গন্ডা জায়গা ননী গোপাল সুত্রধরকে বিক্রি করেছে তা ননী গোপাল সুত্রধরের ছেলে সুকুমার এর দখলে থাকা সত্বেও অভিযুক্ত সুকুমার তার দলবল নিয়ে দুলাল সুত্রধরের বসতঘর নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছে। ৫ লাখ টাকা তাকে না দিলে ঘরের কাজ করতে পারবেনা বলে সুকুমার হুমকি দিয়েছে বলে জানান তারা।
অপরদিকে সুকুমার সুত্রধর বলেন, এটা আমার দলিল মুলে দাবি করতেছি। এসময় বিএস ২৯০৮ নং দাগে তার নিজের দখলে থাকা এবং বিএস ২৯১২ নং দাগে ভুক্তভোগী দুলালের দখলে থাকার বিষয়টি জানতে চাইলে আমতা আমতা করে দখলে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, পুকুরের একটি অংশ আমাকে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলাম, না দেয়ার কারণে কাজ বন্ধ করেছি,
তবে ২৯১২ দাগের জায়গা ভুক্তভোগী দুলালের বাপ-দাদার আমলের পুরানো বসতভিটা, সেই মতে ভুক্তভোগীদের দখলে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্ত সুকুমারের বাবা ননী গোপাল সুত্রধর বলেন, আমার খরিদা জায়গা দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত আমি ও আমার ছেলের দখলে থাকা সত্বেও আমার ছেলে সুকুমার বিষয়টি কেন বুঝতে চায়না সেটি জানিনা, কেউ প্ররোচনা দিয়ে দুলালের বিরুদ্ধে সুকুমারকে লেলিয়ে দিয়েছে কিনা সেটা বুঝতে পারছেনা বলেও জানান তার বাবা।
এছাড়াও নিষেধাজ্ঞার আবেদনে সুকুমার যে মামলাটি করেছে সেই মামলায় সরেজমিনে তদন্ত করে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার এবং থানা পুলিশ আলাদা আলাদা যে ২টি প্রতিবেদন দিয়েছে উক্ত দুটি প্রতিবেদননে বিএস ২৯১২ দাগের ভুক্তভোগী দুলাল সুত্রধরের পৈত্রিক বসতঘর হিসেবে দখলে থাকার বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ ও এসিল্যান্ডের প্রতিবেদন দুটিতে সঠিক বিবরণ উঠে আসায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হইয়া অভিযুক্ত সুকুমার তার দলবল নিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজনকে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদর্শন করে ৫ লাখ টাকা না দিলে কাজ করতে দিবেনা বলে হুমকি দিয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী দুলাল।