কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে গার্ড অব অনার ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব শিকদারকে দাফনের ঘটনাকে অপমানজনক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পুরো ঘটনা কেন তদন্ত করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা জানান।
আজ আদালত জানান, বাজিতপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব শিকদারকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার ছাড়াই দাফন করে মুক্তিযোদ্ধাকে সরাসরি অপমান করা হয়েছে, এটা অন্যায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে গার্ড অব অনার দেওয়ার জন্য প্রস্তুত সবাই। উপস্থিত ছিলেন ফোর্সসহ থানার ওসি। কিন্তু এ সংবাদ জানানোর পর আসেননি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ মর্মে সংবাদও প্রকাশিত হয়। রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ছাড়াই ২৯ জানুয়ারি দুপুরে দাফন করা হয় কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব শিকদারকে। গার্ড অব অনার ছাড়া দাফনের ঘটনার তদন্ত চেয়ে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) হাইকোর্টে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
তবে অভিযুক্ত ইউএনও ওই সময় জানান, সর্বশেষ মুক্তিযোদ্ধা তালিকার গেজেটে নাম না থাকায় যাননি তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করেন। রিটে বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজায় গার্ড অব অনার না দেওয়ার কারণ তদন্ত করার দাবি করা হয়। একই সঙ্গে একজন বীরকে তার প্রাপ্য রাষ্ট্রীয় সম্মান না দেওয়াকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে।
রিটে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
দায়েরকৃত রিটে মুক্তিযোদ্ধাকে কবরস্থানে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবার এ অসম্মানের তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ছেলে রানা শিকদার। রিটকারীর আইনজীবী বলেন, মুক্তিযোদ্ধার জানাজায় গার্ড অব অনার দেওয়া বাংলাদেশের একটি আইন।
এর আগে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব শিকদারের জানাজায় পুলিশের গার্ড অব অনার না দেওয়ায় জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি রাতে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর পৌরসভার দক্ষিণ রাবারকান্দির বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব শিকদার মারা যান। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তার জানাজায় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
এমন পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দিতে পারেনি প্রশাসন। ২৯ জানুয়ারি বিকেলে স্থানীয় রাবারকান্দি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হয়। এ নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
মন্তব্য করুন